Author: Go Nursing Care

  • শিশুকে যেভাবে শোয়াবেন না

    শিশুকে যেভাবে শোয়াবেন না

    ভুল পজিশনে ঘুম পাড়ানোর জন্য ১৯৭০ থেকে ১৯৯১ সালে হাজার হাজার শিশু ঘুমের মধ্যে মারা যায়।বাবা মা যদি সঠিক তথ্যটা জানতেন তাহলে এই শিশুগুলো হয়তো আজও বেঁচে থাকত। 

    কিভাবে এমন হলো? 

    পুরো গল্পটা বলতে বলতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য জানিয়ে দিব। 

    ডাক্তার স্পক একজন বিখ্যাত শিশু ডাক্তার ছিলেন তিনি একটা বই লেখেন, baby and child, কেয়ার নামে।

    বইটা খুব জনপ্রিয় হয় কোটি কোটি কপি বিক্রি হয়ে যায়। 

    সেই বইতে ডক্টর স্পক পরামর্শ দেন শিশুদেরকে বিছানায় চিত করে না শুয়ে উপর করে ঘুম পাড়াতে।তিনি তার কথার পক্ষে কিছু যুক্তি দেন,শিশুকে চিত করে শুইয়ে  ঘুমানোর দুইটা অসুবিধার কথা তিনি বলেন। 

    এক, 

    ঘুমের মধ্যে শিশু যদি বমি করে। 

    চিত হয়ে শুয়ে থাকলে সেই বমি তখন শ্বাসনালীতে ঢুকে বাচ্চার শ্বাস আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

    দুই

     চিৎ হয়ে শুলে বাচ্চার সাধারণত একদিকে মাথা কাত করে থাকে।ফলে মাথা সেই দিকে গোল না হয়ে চ্যাপ্টা হয়ে যেতে পারে। 

    তাই তিনি পরামর্শ দেন যে শুরু থেকেই বাচ্চাকে উপুড় করে শুয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করাতে। কথাগুলো শুনতে যুক্তিপূর্ণ মনে হয়, আবার খুব পরিচিত একজন ডাক্তার বলছেন। 

    তো যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সহ অনেক দেশে লাখ লাখ বাবা-মা তাদের সন্তানকে  উপুড় করে শুয়ে ঘুম পাড়াতে শুরু করেন।হাসপাতাল গুলোতেও এই চর্চা শুরু হয়। 

    যে শিশুরা সেখানে ভর্তি তাদেরকে উপুড় করে ঘুম পাড়ানো শুরু হয়।তো এটার পাশাপাশি আরেকটা জিনিস হওয়া শুরু করল অনেকগুলো দেশে শিশু মৃত্যুহার বেড়ে চলতে লাগলো। 

    এই শিশু মৃত্যু কেমন? 

    একদম সম্পূর্ণ সুস্থ শিশু ঘুমের মধ্যে মারা যাচ্ছে। বেশিরভাগ এর বয়স ৬ মাসের কম। কেন মারা যাচ্ছে তার কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।এটা কে sids বলে।অনেকে এটাকে Cot  death ও বলে। 

    ছোট বাচ্চারা যে খাটের সয় সেটা cot।আর সেখানে ঘুমের মধ্যে মারা যায় বলে Cot  death।বুঝতেই পারছেন একটা পরিবারের জন্য এটা কতটা বেদনাদায়ক হতে পারে। একদম সুস্থ বাচ্চা ঘুম পাড়িয়ে রেখে গেছে বাবা-মা আর এসে দেখে বাচ্চা নিথর হয়ে আছে। না, ফেরার দেশে চলে গেছে। গবেষকেরা অনেক খোঁজাখুঁজি শুরু করলেন যে কি কারণে এই শিশুগুলো মারা যাচ্ছে। শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস হৃদস্পন্দন ইসিজি, অসুস্থতার লক্ষণ,বাইরের আবহাওয়া তাপমাত্রা কোনটা এই মৃত্যুর জন্য দায়ী হতে পারে তা গবেষণা করে দেখা হচ্ছিল। কিন্তু কোন কুলকিনারা  পাওয়া যাচ্ছিল না তখন  কয়েকজন বিজ্ঞানীরা দেখলেন যে, শিশু উপুড় হয়ে ঘুমানোর সাথে একটা সম্পর্ক থাকতে পারে। কিন্তু এটা প্রথমে কেউ খুব বিশ্বাস করল না।

    এমন সাধারন একটা বিষয়,শিশু উপুড় হয়ে ঘুমালো না চিত হয়ে ঘুমালো ,

    এটা কি জীবন মরনের কারণ হতে পারে?

    কিন্তু পরে দেখা গেল যে বাচ্চাগুলো মারা যাচ্ছে তাদের বেশিরভাগই বিছানা উপুড় হয়ে শোয়া অবস্থায় মারা গেছে। 

    অন্যদিকে, যারা চিত হয়ে ঘুমায় তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার অনেক কম।

    আস্তে আস্তে পরিষ্কার হতে থাকল যে উপুড় হয়ে ঘুমালে বাচ্চার মৃত্যুর সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। 

    আমরা এখন জানি যে চিৎ হয়ে ঘুমের সাথে তুলনা করলে যে শিশুরা উপুড় হয়ে ঘুমাচ্ছে তাদের মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা প্রায় ১৩ গুন পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। অর্থাৎ ,প্রথমে যে ডাক্তারের কথা বলে শুরু করলাম ডাক্তার স্পক তিনি যে পরামর্শ দিয়েছিলেন শিশুকে উপুড় করে শোয়াতে সেটা একটা মারাত্মক ভুল পরামর্শ ছিল। কিন্তু যতদিনে আমরা জানতে পেরেছি এটা ভুল পরামর্শ, ততদিনে অনেক শিশু মারা গিয়েছে। উনার যে দুটো যুক্তি ছিল ঘুমের মধ্যে বাচ্চা বমি করলে শ্বাস আটকে যেতে পারে আর চিত করে শোয়ালে মাথা চ্যাপ্টা হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যে মাথা একটু চ্যাপ্টা হলেও বাচ্চা যখন বসা শুরু করে সেটা এমনি এমনি চলে যায়। আর বাচ্চা বমি করলে বাচ্চা সেটা গিলে ফেলতে পারে ,কিংবা কাশি দিয়ে বের করে দিতে পারে। 

    ডক্টর স্পোক একাই যে এই পরামর্শ দিয়েছিলেন, তা না।সমসাময়িক অন্যান্য অনেক চিকিৎসক একই পরামর্শ দিচ্ছিলেন কিন্তু ওনার কাছ থেকে এটা অনেক জনপ্রিয়তা পায়। তার লেখা ঐ বইটা ৪২ টা ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। বাবা মায়েরা খুব মনোযোগ দিয়ে সেই বইয়ের পরামর্শ অনুসরণ করত। সেখানে অনেকগুলো ভালো পরামর্শের সাথে এই ভুল পরামর্শ টা ছিল খুবই দুঃখজনক। বিজ্ঞানীরা যখন জানতে পারলো শিশুদের উপুড় করে ঘুম পাড়ানো কতটা ক্ষতিকর,দেশে দেশে বিশাল কর্মসূচি হাতে নেয়া হল বাবা মায়েদের এটা বোঝাতে। যুক্তরাজ্যে back to sleep campaign শুরু করা হয়,যার ফলে এই ধরনের মৃত্যুর হার অর্ধেকেরও কমে নেমে আসে। ঠিক কিভাবে এই মৃত্যুগুলো হয়, তা নিয়ে এখনো আরো গবেষণা চলছে।তাহলে আমাদের করণীয় কি? 

    সুস্থ বাচ্চা হঠাৎ করে যাতে মৃত্যুবরণ না করে, সেজন্য কি করা যেতে পারে?

    প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেই কাজটা আপনারা করতে পারেন, তা হল শিশুকে চিত করে শুইয়ে ঘুম পাড়ানো। সেটা দিনের বেলার ঘুম হোক বা রাতের বেলার ঘুম হোক সব সময় ঘুমের জন্য শিশুকে বিছানায় চিত করে সোয়াবেন।উপুড় করে বা কাত করে সোয়াবেন না।এক কাত  করে শোয়ালেও মৃত্যুর সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। আবার এক কাত অবস্থা থেকে শিশুকে উপুড় হয়ে পড়তে পারে।তাই খেয়াল রাখবেন ঘুমের সময় শিশুর পিঠ যেন পুরোটা বিছানার গায়ের সাথে লেগে থাকে।এখন কেউ কেউ মনে করতে পারেন যে সব সময় তো বাচ্চাকে চিত করে শোয়ায় মাঝে মাঝে এক কাত করলে হয়তো সমস্যা নাই। এটা করবেন না। গবেষণায় দেখা গেছে এমন করলে মৃত্যুর ঝুঁকি সাত থেকে আট গুণ বেড়ে যেতে পারে। শিশুকে একদম শুরু থেকেই চিত করে ঘুমানোর অভ্যাস করাবেন। শিশুর বয়স এক বছর হওয়া পর্যন্ত এমন চালিয়ে যাবেন।কারণ এক বছর বয়স পর্যন্ত যেকোনো সময় এমন মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এক থেকে চার মাস বয়সী শিশুরা এর শিকার হয়। তাই বলে সারারাত জেগে শিশুকে পাহারা দিতে হবে না যে সে উপুড় হয়ে গেল কিনা। কিছু বড় হতে থাকলে এক সময় নিজে নিজে পাশ ফেরা শিখবে। ঘুমের মধ্যে সে যদি নিজে নিজে পাস ফিরে এক কাত হয় বা  উপুড় হয়ে সয় গবেষণা দেখা গেছে যে  তাতে সমস্যা নাই। তখন তাকে আবার ঘুরিয়ে চিত করার দরকার নাই কিন্তু তার ঘুম যাতে শুরু হয় চিত হয়ে শুয়ে সেটা খেয়াল রাখতে হবে।

    শিশুকে কি কখনোই তাহলে উপর করা যাবে না? 

    অবশ্যই যাবে এবং এটা করা জরুরি। 

    শিশু যখন জেগে থাকে তাকে দিনে কয়েক বার  উপুড় করে রাখবেন।তার সাথে খেলাধুলা করবেন। এতে ঘাড় এবং কাঁধের মাংস পেশী শক্ত হবে ,ফলে শিশু বসা , হামাগুড়ি ,হাঁটতে   শিখবে।এটা শিশুর মাথা গোল রাখতে ও সাহায্য করবে শিশুকে এমন উপুড় করে রাখাকে বলে tummy time. 

    অর্থাৎ, শিশু পেটের উপোর সময় কাটাচ্ছে। এইটা শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ কাজটা করবেন যখন শিশু জেগে আছে এবং অবশ্যই শিশুর আশেপাশে কাউকে থাকতে হবে যে এই সময় শিশুর উপর নজর রাখবে। হাতেগোনা কয়েকটা রোগের কারণে চিকিৎসক শিশুকে উপুড় করে শোয়ানোর পরামর্শ দিতে পারেন ঘুমের সময়ে।

    সেটা শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করবেন। বাচ্চার আশেপাশে কাউকে ধূমপান করতে দেবেন না। সন্তান গর্ভধারণের সময় ধূমপান করা বা ধূমপান করছে এমন কারো আশেপাশে থাকা এবং শিশুর জন্মের পরে তার আশেপাশে কেউ ধূমপান করলে শিশুর এমন মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।এমনকি শিশুর সাথে যদি একজন ধূমপাই ব্যক্তি এক বিছানায় ঘুমায় তাহলেও শিশুর মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায় অর্থাৎ শিশুর আশেপাশে যারা থাকেন তারা ধূমপান ছেড়ে দেয়াই  সব দিক থেকে শ্রেয়।

    শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো। 

    গবেষণায় দেখা গেছে যে, শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে তা এমন মৃত্যু থেকে সুরক্ষা সাহায্য করে। তাছাড়াও বুকের দুধ খাওয়ালে আরও অনেক উপকারিতা আছে। ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ আমরা দেই। আর বাচ্চা যেখানে ঘুমায় সেখানে বালিশ কাথা, কাপড়ের খেলনা যেগুলো বাচ্চার মাথা ঢেকে ফেলতে পারে শ্বাস আটকে যেতে পারে সেগুলো সরিয়ে রাখবেন। ঘুমানোর সময়ে বাচ্চার মাথা আর মুখ  যাতে ঢাকা না থাকে আর খেয়াল রাখবেন ঘুমের সময় বাচ্চার শরীর যাতে খুব গরম না হয়ে যায়। খুব সহজ কিছু নিয়ম জানা থাকলে আর মেনে চললে আপনার ছোট্ট শিশুকে অকাল মৃত্যুর হাত থেকে দূরে রাখতে পারবেন। শেষ করার আগে বলে যায় ,

    কখন শিশুকে নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে যাবেন?

    যদি শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় বা শিশু দেখতে নীল হয়ে যায়, যদি শিশুর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, যদি শিশু অজ্ঞান হয়ে পরে বা মনে হচ্ছে চারপাশে কি হচ্ছে সে বুঝতে পারছে না যা সে স্বাভাবিক ভাবে বুঝতে পারে। 

    ঘুম থেকে কিছুতেই তোলা যাচ্ছে না বা শিশুর যদি খিঁচুনি শুরু হয়। 

    আর কিছু মনের না রাখতে পারলেও শুধু এই স্লোগানটা মনে রাখবেন। 

    back to sleep ,tummy to play. 

    অর্থাৎ পিঠে ঘুম ,পেটে খেলা। 

    সুস্থ থাকবেন, শুভকামনা রইল।

  • বিয়ের আগে যা জানতেই হবে

    বিয়ের আগে যা জানতেই হবে

    যারা বিয়ে করার পরিকল্পনা করছেন তাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় জানাতে আজকে আলোচনাটি করছি।

    কিছু রোগ আছে যা বাইরে থেকে বোঝা যায় না,কিন্তু বিয়ের পরে খুব সহজে স্বামী থেকে স্ত্রী, স্ত্রী থেকে স্বামী বা তারা যখন সন্তান নেন তাদের মাঝে ছড়াতে পারে।

    একটু সচেতন হয়ে আগেই কিছু টেস্ট করালে রোগগুলো ধরা সম্ভব,চিকিৎসা করে সারিয়ে  তোলা বা পরিবারের মাঝে বিস্তার রোধ করা সম্ভব। আমি মোট ছয়টা পরীক্ষার কথা বলব। প্রত্যেকটার উদ্দেশ্য সহজ ভাষায় বুঝিয়ে দিব।

    এক, থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা। 

    প্রায় ১০ বছর আগের কথা আমি তখন  মেডিকেল কলেজে পড়ি। ফোন পেয়ে একজন রোগীর জন্য রক্ত দান করতে গিয়েছি।গিয়ে দেখি যার রক্ত লাগবে সে একজন শিশু,বয়স হবে মাত্র ১০ কি ১১।প্রতি মাসেই তার রক্ত নেয়া লাগে।সাথে ওর বাবা-মা ছিল। বলছিল প্রতি মাসে রক্ত জোগাড় করতে তাদের অনেক কষ্ট হয় তাও তারা সাধ্যমত চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এই শিশুটার যে রোগ হয়েছিল তার নাম থ্যালাসেমিয়া। থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ যোগ্য। সিম্পল একটা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জেনে নেয়া যায় সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি নেই? যেহেতু শিশুটির বাবা-মা টেস্ট আগে থেকে করিয়ে নেন নাই তাই তাদের জানা ছিল না যে তাদের সন্তানের এমন একটা জটিল রোগ হতে পারে। আমি সেদিন সংকল্প করি যে যত জনকে সম্ভব এই রোগের ব্যাপারে সচেতন করব। আমি সেই শিশুর ঘটনা দিয়ে বিষয়টা সহজ করে বুঝিয়ে বলি। শিশুর এই  জটিল রোগটা এসেছিল তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে। বাবা-মা দুইজনেরই থ্যালাসেমিয়া মাইনর ছিল।কিন্তু তারা তা জানতেন না। বাবা-মা সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন কোন অসুখ ছিল না, কোন লক্ষণ ছিল না, এটা নিয়ে তারা কখনো চিন্তাও করেননি এবং বেশিরভাগ মানুষ যাদের থ্যালাসেমিয়া মাইনর থাকে তাদের ক্ষেত্রে এমনটাই হয়,তারা সম্পূর্ণ সুস্থ থাকেন কখনো কখনো একটু রক্তশূন্যতা দেখা যায়। যখন সন্তান থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মায় তখন তারা প্রথম জানতে পারেন যে তাদের নিজেদের থ্যালাসেমিয়া মাইনর ছিল। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তাদের সন্তান একটা গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে,যা শিশুটাকে সারা জীবন ভোগাতে  পারে।

    তাহলে করণীয় কি?

    বিয়ের আগে দুইজনেই একটা রক্ত পরীক্ষা করবেন। তাহলে তখনই ধরা পড়বে আপনাদের সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা।এই রক্ত পরীক্ষার নাম হচ্ছে  HB  electrophoresis ।একটা পরীক্ষায় দেড় হাজার টাকার মত পড়বে একটু বেশি মনে হতে পারে তবে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করলে এটা কিন্তু খুব বেশি না। 

    পরীক্ষা করলে কেমন ফলাফল আসতে পারে?

    মোটা দাগে তিন ধরনের ফলাফল আসতে পারে।

    এক, 

    দুজনের একজনের ও রক্তে কোন সমস্যা নাই।এমন ফলাফল আসলে বাচ্চার থ্যালাসেমিয়া হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নাই। 

     দুই,

    দুইজনের মধ্যে একজনের থ্যালাসেমিয়া মাইনর ধরা পড়লে,

    এই ক্ষেত্রেও বাচ্চার থ্যালাসেমিয়া হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নাই। তবে সন্তানের থ্যালাসেমিয়া মাইনর হওয়া ৫০ শতাংশ সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ বাচ্চা অসুস্থ হবে না কিন্তু সে থ্যালাসেমিয়ার বাহক হতে পারে। অর্থাৎ প্রথম দুই ধরনের ফলাফলের দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নাই। 

    এখন আসি তৃতীয় ধরনের ফলাফলে।

    দুইজনেরই থ্যালাসেমিয়া মাইনর ধরা পড়লে ,এই ক্ষেত্রে বাচ্চার থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মানোর সম্ভাবনা আছে। 

    কতটুকু? 

    ২৫ শতাংশ। 

    আর  ২৫ শতাংশ সম্ভাবনা একদম স্বাভাবিক সন্তান হওয়ার।৫০ শতাংশ সম্ভাবনা থ্যালাসেমিয়া মাইনোর নিয়ে জন্মানোর। অর্থাৎ এই ধরনের ফলাফল আসলে ভাবনা-চিন্তার ব্যাপার আছে।প্রত্যেক প্রেগনেন্সিতেই বাচ্চা থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মানোর সম্ভাবনা ২৫ শতাংশ।এই তথ্য বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে এই দুজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবেন কিনা। হলেও সন্তান নেবেন কিনা আর সন্তান যদি থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মায় ,সে ক্ষেত্রে আগে থেকেই মানসিক আর্থিক প্রস্তুতি নেয়ার একটা ব্যাপার থাকে।

    দুই হেপাটাইটিস বি পরীক্ষা ,

    হেপাটাইটিস বি একটা ভাইরাস। যা আমাদের লিভারের গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু যাদের শরীরে এই ভাইরাসটা বসবাস করছে,তারা অনেকেই জানেন না যে তারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত। ফলে নিজের অজান্তেই তারা অন্য মানুষের মাঝেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে দিতে পারে।

    সুরক্ষা ছাড়া সহবাস করলে একজন থেকে আরেকজনের শরীরে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। অর্থাৎ স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সহজেই এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই বিয়ের আগেই দুইজনেই এটা পরীক্ষা করে নিতে পারেন। একজন আক্রান্ত হলেও আরেকজনে যাতে না ছড়াই,সেই সর্তকতা গুলোও তখন নেয়া যাবে।

    কোন পরীক্ষা করাবেন? 

    দেখিয়ে দিচ্ছি, 

    (HBsAg এবং Anti-HBc) 

    দুইজনেরই পরীক্ষা নেগেটিভ আসলে তো কোন দুশ্চিন্তা নাই।তবে ভবিষ্যতেও সুরক্ষিত থাকার জন্য হেপাটাইটিস বি টিকা নিয়ে নিতে পারেন যদি আগে না নেয়া থাকে।

    ২০০৩ সালে বাংলাদেশের শিশুদের এই টিকা  দেয়া শুরু হয়।তাই আপনার জন্ম তার আগে হলে আলাদা করে টিকা প্রয়োজন হতে পারে। যদি একজনের কারো পরীক্ষার পজিটিভ আসে,তখন আপনার চিকিৎসক আরো কিছু পরীক্ষা করতে দিবেন যাতে সঠিক চিকিৎসা দেয়া যায়। যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন তার শরীরে যাতে এ ভাইরাস না ছড়ায়। সেজন্য টিকা, সহবাসের সময় কনডম ব্যবহার সহ আরো কি কি সর্তকতা অবলম্বন করা প্রয়োজন সে বিষয়ে আপনার চিকিৎসক আপনাকে পরামর্শ দিবেন। এই সব কিছু বিবেচনায় রেখে আপনারা পরবর্তী সিদ্ধান্তগুলো নিতে পারবেন। এখন অনেকে মনে করতে পারেন যে এটা বুঝি যৌন রোগ। আমি আগে যেহেতু কখনো সহবাস করি নাই ,তাই আমার এটা থাকার কোন সম্ভাবনা নাই। 

    এটা ভুল ধারণা।

    সহবাস ছাড়াও আরো অনেক ভাবে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।

    কিভাবে একজন থেকে আরেকজনের শরীরের এই ভাইরাস ছড়ায়? 

    আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে, বীর্যে, সাদাস্রাব ইত্যাদিতে এ ভাইরাস থাকে তাই আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে একই ব্লেড রেজার বা টুথব্রাশ  ব্যবহার করলে ,একই স্যুই ব্যবহার করলে যেমন নাক ফুটো বা কান ফুটো করার সময় ,একই ইনজেকশন ব্যবহার করলে এমন হাসপাতালে বা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিলে যেখানে যন্ত্রপাতি ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয় না,রক্ত আদান-প্রদানে,সুরক্ষা ছাড়া সহবাসের মাধ্যমে এবং জন্মের সময় মা থেকে শিশুর শরীরে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।অবশ্য এখন রক্ত দেয়ার আগে প্রায় সব জায়গাতেই দেখে নেয়া হয় রক্তে এ ভাইরাস আছে কিনা।অর্থাৎ সহবাস ছাড়াও আরো অনেক ভাবে এটা ছড়াতে পারে। আপনার অজান্তে আপনিও আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। সেটা আগে আগে জেনে নিলে আপনার আর আপনার পার্টনারের সুস্থতার জন্য পরবর্তী সিদ্ধান্তগুলো নিতে সাহায্য করবে। 

    ৩. হেপাটাইটিস সি পরীক্ষা। 

    হেপাটাইটিস বি এর মত হেপাটাইটিস সি, ও এক ধরনের ভাইরাস যা লিভারের অনেক ক্ষতি করতে পারে। এটা ছড়ায় সাধারণত রক্তের মাধ্যমে।একই সুই বা ইনজেকশন ব্যবহার করলে যাতে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত লেগে থাকতে পারে,চিকিৎসার যন্ত্রপাতি ঠিকমতো জীবাণুমুক্ত না করলে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। লিভার অনেকটুকু নষ্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত সাধারণত কোন লক্ষণ দেখা যায় না। অর্থাৎ অজান্তে অনেকে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে এবং অন্যদের মাঝে ছড়াতে পারে। সুরক্ষা ছাড়া সহবাসের মাধ্যমে এবং মা থেকে সন্তানের শরীরে এই  ভাইরাস ছড়াতে পারে,যদিও এভাবে ছড়ানোর সম্ভাবনা খুব কম। তবে কম হলেও যেহেতু একটা সম্ভাবনা আছে,স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ছড়ানো এবং মা থেকে সন্তানের ছড়ানোর,তাই পরীক্ষা করিয়ে নেয়াই শ্রেয়।এই  পরীক্ষাটা করে নিতে পারেন,

    ( Anti-HCV) 

    খরচ পড়তে পারে এক থেকে দেড় হাজারের মতো। পজেটিভ আসলে আপনার চিকিৎসক আরো কিছু পরীক্ষা করতে বলবেন কনফার্ম হবার জন্য এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদানের জন্য। 

    হেপাটাইটিস সি চিকিৎসা করলে সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়ে যেতে পারে। আর আপনার কাছ থেকে আপনার পার্টনারের শরীরে এই ভাইরাস যাতে না ছড়ায় সেজন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। 

    ৪. এইচআইভি পরীক্ষা।

    এইচআইভি সম্বন্ধে আপনারা অনেকেই জানেন। আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সহবাসের মাধ্যমে সাধারণত এটা ছড়ায়। তবে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে একই  বা ইনজেকশন ব্যবহার করলে,জন্মের সময়ে মায়ের কাছ থেকে বা মায়ের বুকের দুধের মাধ্যমে শিশু  এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে বহুবছর ধরে এই এইচআইভি ভাইরাসের কোন লক্ষণ নাও থাকতে পারে। আর সেই সময়ে আক্রান্ত একজন থেকে আরেকজনে  ছড়াতে পারে।তাই পরীক্ষা করে নেয়াই শ্রেয়।  

    কোন পরীক্ষা তা করবেন?

    HIV AG/Ab. 

    ৬০০ থেকে ১০০০ এর মতো খরচ করতে পারে। পজেটিভ আসলে চিকিৎসার জন্য ওষুধ শুরু করতে পারবেন, যা আপনার রক্তে ভাইরাসের পরিমাণ কমিয়ে আনবে। কয়েক মাসের মধ্যে ভাইরাসের পরিমাণ এতটাও কমে যেতে পারে যে ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি এটা আর কাউকে ছড়াতে পারবেন না।

    ৫. যৌনবাহিত রোগ পরীক্ষা। 

    অনেকেই যৌনবাহিত রোগে বা 

    sexually transmitted infections এ ভোগেন  কিন্তু জানেন না।শুধুমাত্র টেস্ট করার পরে ধরা পড়ে। কিন্তু অনেকেরই যেহেতু কোন লক্ষণ থাকে না,ফলে টেস্ট করা হয় না চিকিৎসাও হয় না। পরে নানান ধরনের শারীরিক সমস্যা এবং  সন্তান ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।অথচ সময় মত অল্প কয়েক দিনে অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স নিলেই রোগটা সেরে যেতো।এই চারটা কমন যৌনবাহিত রোগ পরীক্ষা করতে পারেন।

    (সিফিলিস) 

    (গনোরিয়া) 

    (ক্ল্যামিডিয়া) 

    (ট্রিকোমনাইসিস)

    রোগ ধরা পড়লে সঠিক চিকিৎসা করাতে পারবেন। এবং একজন থেকে আরেকজনের ছড়ানো ঠেকাতে পারবেন। 

    ৬. ব্লাড গ্রুপ।

    বিয়ের আগে রক্তের গ্রুপ জানতেই হবে এমন না।অনেকের একটা ধারণা আছে যে স্বামী স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ একই হলে সমস্যা হতে পারে।এই কথার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হলে এবং গর্ভের সন্তানের রক্তের গ্রুপ পজেটিভ হলে প্রেগনেন্সিতে বা বাচ্চা জন্মের পরপর একটা ইনজেকশন দিতে হয়। যেটা আপনার চিকিৎসকই তখন বলে দিবেন। তাও একজন আরেকজনের রক্তের গ্রুপ জানা থাকা ভালো। হঠাৎ কোনো বিপদে পড়লে কাজে লাগতে পারে। তাই রক্তের গ্রুপ জানা না থাকলে বিয়ের আগে এই পরীক্ষাটা করিয়ে নিতে পারেন। 

    আমি আলোচনায় যেই  পরীক্ষাগুলোর কথা বললাম,সবগুলোর কারণ বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেছি কেন বিয়ের আগে এই পরীক্ষাগুলো করা গুরুত্বপূর্ণ।আরো ভালো হয় যদি দুজন মিলে বিয়ের আগে একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে পারেন। আপনাদের পরিবারে কি কি রোগ আছে আপনাদের স্বাস্থ্য কেমন,সেগুলো বিবেচনায় রেখে তিনি আরো ভালোভাবে পরামর্শ দিতে পারবেন। আরেকটা বিশেষ কথা আমি যে টেস্ট গুলোর কথা বলেছি,সেগুলোর কোনটাতে রোগ ধরা না পড়লেই যে বিয়ে করা যাবে না, তা না। অনেকগুলো রোগের চিকিৎসা আছে,একজন থেকে আরেকজনের যাতে না ছড়ায় তেমন অনেক ব্যবস্থা আছে।

  • যে ধরণের মাথাব্যথা স্ট্রোকের লক্ষণ

    যে ধরণের মাথাব্যথা স্ট্রোকের লক্ষণ

    আজকে মাথা ব্যাথা নিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ সর্তকতা জানাতে আলোচনা করছি। 

    কয়েক সপ্তাহ আগে আমি একজন রোগী দেখি যার স্ট্রোক হয়েছিল অর্থাৎ ব্রেনের রক্তক্ষরণ হয়েছে। তার মাথায় এক ধরনের ব্যথা হয় কিন্তু তিনি জানতে না, ওই মাথা ব্যথা ব্রেন স্টোকের লক্ষণ। মাথাব্যথা আস্তে আস্তে কমে তাই তিনি আর হাসপাতালে আসেননি, ডাক্তারের সাথে আলোচনাও করেননি। কিন্তু কয়েকদিন পরেই তার খিচুনি শুরু হয় এই পর্যায়ের পরিবার তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তখন আমরা কিছু পরীক্ষা করে দেখতে পাই তার ব্রেনে রক্তক্ষরণ হয়েছে ,স্ট্রোক  হয়েছে। সব ধরনের চিকিৎসায় দেয়া হয় কিন্তু তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। তবে তিনি যদি আগেই হাসপাতালে আসতেন প্রথম যখন মাথা ব্যথা হয়েছিল তাহলে বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকতো। আজকে আলোচনা করছি ওই মাথাব্যথাটা ভালো করে বুঝিয়ে ও চিনিয়ে দিতে যাতে আপনার প্রিয়জনের বা আশেপাশে  কারোর যদি এই ধরনের মাথাব্যথা দেখা দেয় তখন সঠিক পদক্ষেপটা নিতে পারেন এবং সময়মতো হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাটা নিতে পারেন। তাহলে শুরু করি। 

    আপনাদের সবারই কমবেশি মাথাব্যথা হয়। নানা কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। একটু পানি কম খেলে ,এক বেলা খাবার না খেলে,অনেক ক্লান্ত থাকলে, ঘুম কম হলে মাথা ব্যথা করতে পারে। প্রায় অনেক ধরনের মাথা ব্যথার ধরন আছে। এগুলো বেশি ভাগ মাথাব্যথা কারণ দুশ্চিন্তার কারণ না এমনি চলে যায়। 

    কিন্তু এক ধরনের মাথা ব্যথা হলে খুব দ্রুত মৃত্যুর মুখে ফেলে দিতে পারে। তাই এটা কোনমতে এড়িয়ে চলা যাবে না। সেটা কি ধরনের মাথাব্যথা? 

    শুরুতেই যে রোগীর কথা বলেছিলাম,সেখানে ফিরে যাই। তিনি প্রতিদিন সাধারনত যা যা করছিলেন সেদিন ও তাই করছিলেন। মাথাব্যথা যখন শুরু হয় তখন তিনি বসে বই পড়ছিলেন এই অবস্থায় হঠাৎ করে মাথার পেছনদিকে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হয়। মনে হয় কেউ হঠাৎ করে মাথায় ইট দিয়ে বাড়ি করেছে এমন তীব্র মাথাব্যথা তার জীবনে কখনো হয়নি। তার বমি বমি লাগে এবং তিনি কয়েকবার বমি করেন। কয়েক ঘন্টা পর আস্তে আস্তে ব্যাথাটা কমতে থাকে, মাথাব্যথা থাকে কিন্তু আগের মত ঠিক এতটা না। তিনি ভালো বোধ করতে শুরু করেন তাই হাসপাতালে আর আসেননি। কয়েকদিন পরে তার খিচুনি শুরু হলে তাকে হাসপাতাল আনা হয়। আমরা মাথায় সিটি স্ক্যান করায় তখন দেখতে পায় তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছিল,ব্রেন স্টক হয়েছিল কিন্তু অনেক দেরি হয়ে যাওয়াতে পরে চিকিৎসা করেও তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয়নি। তাহলে কোন ধরনের মাথা ব্যথায় দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে??

    যদি আপনার মাথা ব্যথা খুব দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে বা হঠাৎ করে প্রচন্ড মাথা ব্যথা শুরু হয়। যেটা এই রোগীর ক্ষেত্রে হয়েছিল। যদি মাথা ব্যথা শুরু হওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে খুব তীব্র হয়ে যায় তাহলে সেটা দুশ্চিন্তার কারণ। বজ্রপাতের মত কম সময় প্রচন্ড মাথা ব্যথা শুরু হলে সেটা দুশ্চিন্তার কারণ। অধিকাংশ রোগীর  ক্ষেত্রে মাথা ব্যাথা খুব কম সময় তীব্র হতে পারে। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে কয়েক মিনিট বা এক থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত  লাগতে পারে। কয়েক সেকেন্ড বা কয়েক মিনিট যতই হোক আপনি দ্রুত হাসপাতালে যাবেন।এখানে খেয়াল করেন সাধারণত আমাদের মাথাব্যথা কিন্তু এমন হয় না। প্রথমে আমাদের মাথা হালকা ব্যথা হতে শুরু করে কেউ কেউ বুঝতে পারে এই বুঝি মাথা ব্যথা শুরু হবে। অনেকেই এটা সেটা করে কমানোর চেষ্টা করে। তারপর অনেক সময় মাথাব্যথা সেরে যায় অনেক সময় চলতে থাকে আবার কখনো আস্তে আস্তে মাথা ব্যথা আরো তীব্র হতে থাকে। এই মাথা ব্যাথার কথা আমরা এখানে বলছি না ,এই ব্যথা তেমন দুশ্চিন্তার কারণ নয়।

    শুরুতেই খুব তীব্র মাথাব্যথা হবে কয়েক সেকেন্ড বা কয়েক মিনিটেই প্রচন্ড হলে এরকম ব্যথা দুশ্চিন্তার কারণ,তখন চিকিৎসক এর  শরণাপন্ন অবশ্যই হতে হবে। এমন মাথা ব্যথার সাথে আরও কিছু লক্ষণ থাকতে পারে।

    অন্যান্য যেসব লক্ষণ থাকতে পারে যেমন,

    • বমি বমি ভাব বা বমি। 
    • আলোতে অসস্তি।
    • আবোল তাবোল বলা বা কনফিউশন। 
    • জ্ঞান হারানো। 
    • চোখে ব্যথা, চোখের পাতা নিচে নেমে আসা।
    • একটার জায়গায় দুইটা দেখা 
    • ঘাড় শক্ত হওয়া। 
    • খিচুনি ইত্যাদি।

    এই মাথাব্যথার সাথে যদি আর কোন লক্ষণ না ও থাকে তাও দ্রুত হাসপাতালে যাবেন। কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে শুধুমাত্র তীব্র মাথাব্যথা হয় এবং আস্তে আস্তে বাড়ে কিন্তু এসব লক্ষণ থাকে না। কিন্তু তাদের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। এ জায়গাটাতে অনেক রোগী ভুল করে দেখা যায় যে কিছু সময় পার হলে মাথা ব্যথা কমে যায় তখন তারা মনে করেন যে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই মাথাব্যথা তো সেরেই যাচ্ছে। এটা করবেন না যেমন বজ্রপাতের মত মাথা ব্যাথার কথা বললাম এমন হলে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে যাবেন। একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আলোচনাটা শেষ করতে চাই। এমন মাথাব্যথা হলেই ঘাবড়ে যাবেন না এই ধরনের মাথাব্যথা তা হওয়ার মানে যে বিপদ তা না।সহজেই সেরে যাবে বা দুশ্চিন্তার কারণ নেই এমন কিছু কারণেও এই ধরনের মাথা ব্যথা হতে পারে। তবে গুরুতর হওয়ার যেহেতু একটা সম্ভাবনা আছে তাই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন। তিনি আপনার সাথে কথা বলে আপনার হাত, পা, চোখ ,মুখ, ইত্যাদি পরীক্ষা করে সঠিক পরামর্শটা দিতে পারবেন। তাকে অবশ্যই আপনার সকল সমস্যা খুলে বলবেন।এটা শুনে তিনি সঠিক পরামর্শ দিতে পারবেন।

    নিরাপদে থাকবেন।

  • দ্রুত ওজন কমাতে সকালে যা করবেন

    দ্রুত ওজন কমাতে সকালে যা করবেন

    ওজন কমানোর চেষ্টায় দ্রুত সাফল্য এনে দিবে এমন ৮টি সকালের অভ্যাস এই আর্টিকেলে তুলে ধরা হয়েছে। এই অভ্যাসগুলো ওজন কমানোর পাশাপাশি আপনার শরীর সুস্থ রাখতেও সহায়তা করবে।

    1. পানি খাওয়া
    2. স্ন্যাকস বা নাস্তা
    3. হেঁটে যাওয়া
    4. চিনি ছাড়া চা-কফি
    5. ওজন মাপা
    6. ব্যায়াম করা
    7. পর্যাপ্ত ঘুমানো
    8. প্রতিদিনের রুটিন

    ১. খালি পেটে আধা লিটার পানি খাওয়া

    সকালে নাস্তা খাওয়ার আগে আধা লিটার বা পূর্ণ দুই গ্লাস পানি খেয়ে নিতে পারেন। এতে পেট কিছুটা ভরে আছে এমন মনে হবে, ফলে নাস্তায় বেশি না খেলেও মনে হবে পেট ভরে গেছে। এছাড়া পানিতে কোন ক্যালরি না থাকায় এটি একেবারেই ওজন বাড়ায় না। তাই নাস্তা খাওয়ার আগে কোন দুশ্চিন্তা ছাড়া আপনি আধা লিটার পানি পান করে নিতে পারবেন। 

    দিনের অন্যান্য বেলাতেও এই কৌশলটি কাজে লাগানো যায়। খাওয়ার আগে আধা লিটার পানি খেয়ে তারপর খাওয়া শুরু করলে আপনি সাধারণত যতটুকু খাবার খান, তার চেয়ে কম পরিমাণে খেয়েও হয়তো পেট ভরে যাবে। এভাবে এই অভ্যাসটি ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

    অনেকের ধারণা খাওয়ার আগে পানি পান করতে নেই, করলেও তা খাবার খাওয়ার কমপক্ষে আধা ঘণ্টা আগে পান করতে হবে। তা নাহলে হজমে সমস্যা হবে। এমন ধারণা বা পরামর্শের কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।

    তবে আগে থেকে সকালে একসাথে দুই গ্লাস পানি খেয়ে ফেলার অভ্যাস না থাকলে আস্তে আস্তে পরিমাণ বাড়ান। প্রথমদিকে কিছুটা অস্বস্তি লাগলেও এতে চিন্তার কিছু নেই। কয়েকদিনের মধ্যেই এই অস্বস্তি দূর হয়ে যাবে।

    ২. সারাদিনের স্ন্যাকস বা নাস্তা ঠিক করে ফেলা

    বেশি ক্ষুধা লাগলে আমরা অনেক সময় অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ফেলি, খাবারটি আদৌ স্বাস্থ্যকর কি না সে বিষয়ে চিন্তা করার সময়-সুযোগ পাওয়া যায় না। হয়তো সিঙ্গারা, পুরি, জিলাপি, বা কোক – হাতের নাগালে যা পাওয়া যায় সেটাই খেয়ে ফেলা হয়। এগুলো যে খুব স্বাস্থ্যকর খাবার না প্রায় সবারই জানা, এরপরেও লোভ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে।

    এই প্রবণতা প্রতিরোধের একটি কার্যকর উপায় হতে পারে সকালেই সারাদিনের নাস্তা হিসেবে কী কী খাওয়া যায় তা চিন্তা করে রাখা। বাড়ির বাইরে গেলে হয়তো একটা বক্সে ফল, শশা, গাজর বা টমেটো কেটে সাথে নিয়ে যেতে পারেন। বিরতির সময় সেটা খেয়ে নেয়া যাবে। 

    আবার ৭-৮ টা বাদাম একটা প্যাকেট করে সাথে রাখতে পারেন। এছাড়া নাস্তাটি ঘরে তৈরি কোন স্বাস্থ্যকর ও মুখরোচক খাবারও হতে পারে। সকালে পরিকল্পনা করে রাখলে বা সাথে খাওয়ার মত কিছু থাকলে হয়তো এই অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আকর্ষণ ঠেকানো একটু সহজ হবে। 

    ৩. সকালে হেঁটে হেঁটে কাজে বা স্কুলে যাওয়া

    সকালে কাজে, বাজারে, বা বাচ্চাকে স্কুলে দিতে যাওয়ার সময় হেঁটে যেতে পারেন। দূরত্ব বেশি হলে অল্প অল্প করে শুরু করুন। এরপর আস্তে আস্তে হাঁটার পরিমাণ বাড়াবেন। হাঁটার সময় দ্রুত হাঁটার চেষ্টা করবেন।

    রিক্সায় করে যাওয়ার অভ্যাস থাকলে শেষ ১০ মিনিটের রাস্তাটুকু একটু আগে নেমে হেঁটে যাওয়া যায়। বাসে করে গেলে ১-২ স্টপ আগে নেমে বাকিটুকু হেঁটে যেতে পারেন। গাড়ি ১০ মিনিট আগে কোথাও পার্ক করে বাকি পথ হেঁটে যাওয়ার অভ্যাস করুন। আস্তে আস্তে হাঁটার পরিমাণটা বাড়ালে প্রক্রিয়াটি আপনার জন্য সহজ হবে। 

    প্রতিদিনের কাজ ও যাতায়াতের মধ্যে যদি একটু একটু করে ব্যায়ামের চর্চা শুরু করা যায়, তাহলে ব্যায়ামের অভ্যাস দৈনন্দিন জীবনের রুটিনের মত আয়ত্তে চলে আসবে। শুধু ওজন কমানোর জন্যই না, ওজন কমার পরে সেই ওজন ধরে রাখার জন্য এবং শরীর সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা অপরিহার্য।  

    ৪. চিনি ছাড়া চা-কফি খাওয়া

    সকালে যদি চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে সেগুলো চিনি ছাড়া খাওয়ার অভ্যাস করুন। চিনি থেকে খুব সহজেই বাড়তি ক্যালরি আসে, যা ওজন বাড়িয়ে দেয়। সুস্থ থাকার জন্য আলাদা করে চিনি খাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। শরীর চিনি থেকে কোন বিশেষ পুষ্টিও পায় না। তাই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে চিনি যতটুকু এড়িয়ে চলা যায়, ততই ভালো।

    চা-কফিতে চিনি খাওয়া কমিয়ে দিলে বা চিনি খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিলে তা ওজন কমাতে অধিক সহায়ক হবে। অভ্যাস না থাকায় প্রথম প্রথম খেতে একটু খারাপ লাগতে পারে, কিন্তু আস্তে আস্তে চিনি ছাড়া চা-কফিই ভালো লাগা শুরু করবে। 

    আবার চায়ের সাথে অনেকের বিস্কুট খাওয়ার অভ্যাস থাকে। বিস্কুট খেতে তেমন মিষ্টি না হলেও এটি বানাতে সাধারণত প্রচুর চিনি, ময়দা ও ফ্যাট ব্যবহার করা হয়। তাই অধিকাংশ বিস্কুটেই প্রচুর ক্যালরি থাকে। তাই ওজন কমাতে চাইলে চায়ের সাথে বিস্কুট খাওয়া এড়িয়ে চলাই ভালো।

    ৫. সকালে ওজন মাপা

    গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ওজন মাপে, তারা ওজন কমাতে বেশি সফল হয়। এলোমেলোভাবে বছরে হাতেগোনা কয়েকবার ওজন মাপলে হয়তো সাময়িকভাবে পরদিন থেকে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস তৈরি করার ইচ্ছা জাগে, তবে প্রক্রিয়াটি নিয়মিত চালিয়ে যাওয়ার মত মানসিক অনুপ্রেরণা ও দায়বদ্ধতা থাকে না। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন সকালে উঠে নিজের ওজন মেপে ফেলুন। 

    ওজন মাপার নিয়ম হচ্ছে সকালে বাথরুম সেরে খালি পেটে মাপা। প্রতিদিন একই কাপড় বা একই ধরনের কাপড় পরে ওজন মাপার চেষ্টা করা উচিত। এরপর ওজন একটি চার্টে বা ক্যালেন্ডারে টুকে রাখা যায়। তাছাড়া ফোনে বিভিন্ন অ্যাপ পাওয়া যায় যেখানে সাপ্তাহিক, মাসিক ও বাৎসরিক ওজন গ্রাফ আকারে দেখানো হয়। এগুলোতেও ওজন সেইভ করে রাখতে পারেন। এভাবে সহজেই ওজন বাড়ছে না কমছে সেদিকে খেয়াল রাখা যাবে।

    যদি স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো মেনে চলার পরেও ওজন না কমে, তাহলে কারণটা খুঁজে বের করলে সেই অনুযায়ী পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। ওজন মাপলেই যে ওজন কমে যাবে না তা সঠিক, কিন্তু প্রতিদিনের শুরুতে ওজন মাপার ফলে আপনার মাথায় অ্যাকশন পয়েন্টগুলো ঘোরাফেরা করবে। এর ফলে হয়তো আপনি একটু বেশি হাঁটার সিদ্ধান্ত নিবেন, বা একদিন ফাস্টফুড খাবেন না বলে ঠিক করবেন। এগুলোই আপনার ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। 

    প্রতিদিন ওজন মাপলে কারও কারও একটু উদ্বেগের সৃষ্টি হতে পারে। আপনার ক্ষেত্রে যদি এমন হয়, তাহলে প্রতিদিন না মেপে কয়েক দিন পর পর বা সপ্তাহে একটা নির্দিষ্ট দিনে মাপতে পারেন।

    ৬. সকাল সকাল ব্যায়াম করা

    ওজন কমাতে হলে যে ব্যায়াম করতে হবে এটা সবারই জানা। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, দিনের নানা কাজের ব্যস্ততায় সেটা পেছাতে পেছাতে আর করা হয়ে ওঠে না। তাই সকাল সকাল ব্যায়ামটা সেরে ফেললে ভালো।

    যে কোন ধরনের ব্যায়াম করা যায়, যেমন দড়িলাফ, দ্রুত হাঁটা, দৌড়, উঠবস ও ভারোত্তোলন। যেটা সুবিধা হয় এবং ভালো লাগে এমন ব্যায়াম বেছে নিয়ে সকাল সকাল ব্যায়াম করে ফেলুন। দিনের শুরুতেই তখন একটি বড় কাজ সম্পন্ন করে ফেলেছেন বলে মনে হবে। এই অনুপ্রেরণা সারাদিন মন ভালো রাখতে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিতেও সাহায্য করবে। বিকেলে সময় পেলে আবার ব্যায়াম করতে পারবেন।

    ৭. পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো

    সুস্থ থাকতে প্রতিদিন খাবার ও পানির মতোই ঘুমও দরকার। ঘুম যে কেবল বিশ্রামের জন্য প্রয়োজন তা নয়। ঘুমের মধ্যেই ব্রেইন সচল থাকে এবং অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করে।

    ওজন কমানোর সাথে ঘুমের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। অনেকগুলো গবেষণায় দেখা গেছে যে কম ঘুমের সাথে অতিরিক্ত ওজনের সম্পর্ক আছে, যেটা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। কম ঘুম হলে ক্ষুধা বেশি লাগতে পারে, পরিমাণে বেশি খাওয়া হতে পারে, অনেক বেশি ফ্যাট বা কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারের প্রতি ঝোঁক আসতে পারে। রাত জেগে থাকলে তখন আবার একটা কিছু খেতে ইচ্ছা করতে পারে।

    তাছাড়া ঘুম কম হলে দিনে ক্লান্ত লাগতে পারে, যে কারণে হয়তো ব্যায়াম বা সময় নিয়ে ভালো খাবার খাওয়ার আগ্রহ চলে যায়। চটপট ফাস্টফুড বা প্রক্রিয়াজাত খাবার খেতে ইচ্ছা করে। দিনের পর দিন ঘুম কম হলে মানসিক চাপ দেখা দিতে পারে, যেটা অনেকভাবে ওজন বাড়াতে পারে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেটের মেদ কমানোর উপায় আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।

    মোট কথা, ওজন কমানোর সময়েও পর্যাপ্ত পরিমাণে ভালো, একটানা ঘুম দরকার। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। সকালে উঠে হিসাব করে দেখুন কতক্ষণ ঘুমালেন। যদি হিসাবে ঘুম কম হচ্ছে বলে উঠে আসে, তাহলে ঘুমের রুটিনে পরিবর্তন আনতে হবে।

    ৮. প্রতিদিনের জন্য অ্যাকশন পয়েন্ট ঠিক করা

    সকালে ওজন মাপার পরে সেই দিনের জন্য একটি নির্দিষ্ট অ্যাকশন পয়েন্ট ঠিক করে নিতে পারেন। ঠিক মত পালন করলে এই অভ্যাস ওজন কমাতে সহায়ক হবে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় এই অ্যাকশন পয়েন্টের গুরুত্ব উঠে আসে। ১০০ জন অতিরিক্ত ওজনের মানুষকে নিয়ে এই গবেষণাটি করা হয়।

    গবেষণায় এই ১০০ জন মানুষকে দুই দলে ভাগ করে এক দলকে প্রতিদিন সকালে ওজন মাপতে বলা হয়। আরেকদলকেও সকালে ওজন মাপতে বলা হয়, তবে এর সাথে সেই দিনের জন্য একটি অ্যাকশন পয়েন্ট বা নির্দিষ্ট কাজ ঠিক করতে বলা হয় যেটি ওজন কমাতে সাহায্য করবে। এমন কাজের মধ্যে ছিলো—

    • আজকে আমি টেবিলে বসে, ফোন-টিভি না দেখা ছাড়া কোন খাবার খাবো না
    • আজকে বন্ধুদের সাথে বসে আড্ডা না দিয়ে একসাথে হাঁটতে যাব
    • রাত ৮টার পর আজকে কিছু খাবো না
    • আজকে ১০০০০ কদম হাঁটব

    এরকম অনেকগুলো অ্যাকশন পয়েন্টের তালিকা থেকে যেকোনো একটা কাজ তারা সেই দিনের জন্য ঠিক করেন। এভাবে প্রতিদিন তারা যেকোনো একটা বেছে নিতো, এবং সপ্তাহ শেষে চিন্তা করতো কোন কাজটি ওজন কমাতে বেশি সাহায্য করেছে। 

    ৮ সপ্তাহ পরে কোন দলের কতটুকু ওজন কমলো তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। যারা প্রথম দলে ছিলো, অর্থাৎ যারা শুধু ওজন মেপেছে, তাদের ওজন কমে গড়ে ১ কেজির মত। আর দ্বিতীয় দল, যারা ওজন মাপার পরে একটা অ্যাকশন পয়েন্ট বেছে নিয়েছিলো, তাদের ওজন কমে গড়ে ৪ কেজিরও বেশি। অর্থাৎ দুই দলেরই ওজন কমে, তবে দ্বিতীয় দল থেকে প্রায় ৩ কেজির মত বেশি ওজন কমেছে!

    তাই আজ থেকেই সকালে ওজন মাপার পরে প্রতিদিনের জন্য একটি করে অ্যাকশন পয়েন্ট বাছাই করা শুরু করে দিন। আমাদের পছন্দের কিছু ওজন কমানোর অ্যাকশন পয়েন্ট তুলে ধরা হয়েছে এই আর্টিকেলে। 

    তবে শুধু একটা পয়েন্ট মেনে চললে, যেমন কোক খাওয়া থেকে বিরত থেকে আবার ২ প্লেট ভাত খেয়ে নিলে নিশ্চয়ই ওজন কমানো সম্ভব হবে না। ওজন কমানোর জন্য স্বাভাবিকভাবেই যা যা করণীয় – যেমন স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়াম – তার সাথে অ্যাকশন পয়েন্টগুলো থেকে একটা কাজ বেছে নিয়ে সেটার ওপর সেই দিন বেশি গুরুত্ব দিবেন।

  • পেটের মেদ কমানোর উপায়

    পেটের মেদ কমানোর উপায়

    পেটের মেদ কমানোর উপায়

    পেটের মেদ দ্রুত কমাতে সাহায্য করবে এমন ১০টি অভ্যাস নিয়ে এই লেখায় আলোচনা করা হয়েছে।

    পেটের অতিরিক্ত মেদ বা ভুঁড়ি অনেকের জন্যই একটি অস্বস্তিকর বিষয়। ছোট ছোট অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের কারণে আমাদের পেটে মেদ জমে। পেট ছাড়াও শরীরের অন্যান্য স্থানে মেদ জমার অন্যতম কারণ এই অভ্যাসগুলো। পেটের মেদ দ্রুত কমাতে সাহায্য করবে এমন ১০টি অভ্যাস নিয়ে এই লেখায় আলোচনা করা হয়েছে।

    এই অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো এড়ানো গেলে শুধুমাত্র পেটের মেদ নয়, বরং কোমরের মেদ, মুখের চর্বি, উরুর মেদ, নিতম্বের মেদ কমানো সম্ভব।

    সুচিপত্র, 

    • 1.দ্রুত খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিন
    • 2.কোনো বেলার খাবার বাদ দিবেন না
    • 3.বড় প্লেটের বদলে ছোট প্লেট বেছে নিন
    • 4.সৌজন্যবোধ থেকে বেশি খাবেন না
    • 5.আনমনে খাওয়া পরিহার করুন
    • 6.মানসিক চাপ মোকাবেলা করুন
    • 7.অস্বাস্থ্যকর ঘুমের রুটিন বদলে ফেলুন
    • 8.সাদা চাল, সাদা আটার বিকল্প বেছে নিন
    • 9.খাওয়ার আগে মোড়ক যাচাই করে নিন
    • 10.শুয়ে বসে না থেকে অ্যাকটিভ হোন

    ১. দ্রুত খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিন

    খাবার খাওয়া শুরু করার পর যখন সেই খাবার পেটে যায়, তখন পাকস্থলী থেকে মস্তিষ্কে সংকেত পৌঁছায়—সহজ ভাষায় পেটের সাথে ব্রেইনের কথাবার্তা হয়। পেট ভরেছে কি ভরেনি তা বুঝতে ব্রেইনের ২০ মিনিট পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। দ্রুত খাবার খেলে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে, কারণ পেট ভরে যাওয়ার খবরটি পাকস্থলী থেকে হয়তো অত দ্রুত ব্রেইনে নাও পৌঁছাতে পারে।

    পেটের মেদ কমাতে করণীয়,

    অতিরিক্ত না খেয়ে ফেলার জন্য ধীরে ধীরে খাবার খাওয়া এবং খাওয়ার সময় খাবারের প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। এই প্রক্রিয়াকে ‘মাইন্ডফুল ইটিং’ বা ‘মনোযোগ সহকারে খাওয়া’ বলা হয়। এভাবে অতিরিক্ত ক্যালরি খেয়ে ফেলা এড়ানো সম্ভব।তবে কোনো কারণে যদি খুব দ্রুত খেতেই হয়, তাহলে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার প্লেটে নিয়ে সেটুকুই খেয়ে শেষ করুন। এতে বাড়তি খাবার খাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

    ২. কোনো বেলার খাবার বাদ দিবেন না

    অনেকে সকালের নাস্তা বাদ দিয়ে একবারে দুপুরে খাবার খাওয়ার পরিকল্পনা করেন। এক বেলা খাবার বাদ দিলে অপরবেলায় বেশি খাবার খাওয়া বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে।[৩][৪] একারণে পেটের মেদ বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।

    পেটের মেদ কমাতে করণীয়

    আপনার যদি কোনো বেলার খাবার বাদ দেওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে এখন থেকেই তা বদলে ফেলার চেষ্টা করুন।[৫] কোন বেলার খাবার বাদ দিবেন না। যদি কোনো কারণে খাবার বাদ পড়ে যায়, তাহলে পরের কোনো বেলায় যেন অতিরিক্ত ভোজন বা অস্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়া হয় সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।

    ৩. বড় প্লেটের বদলে ছোট প্লেট বেছে নিন

    এক্ষেত্রে মূল বিষয় প্লেটের আকার নয়, বরং কতটুকু খাবার শরীরে যাচ্ছে সেটি। সাধারণত প্লেটের আকারে বড় হলে প্লেটে বেশি খাবার আঁটানো যায়, ফলে অবচেতন মনেও সাধারণত খাবার একটু বেশী পরিমাণে নেয়া হয়। বেশিরভাগ মানুষের মাঝেই সাধারণত প্লেটে যতটুকু খাবার নেওয়া হয় তার পুরোটাই শেষ করার প্রবণতা থাকে। কিছু খাবার বাকি থাকা অবস্থায় পেট ভরা মনে হলেও প্লেটে খাবার রেখে উঠে যাওয়া হয় না। এভাবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে যায়, ওজন বাড়ে এবং শরীরে মেদ জমে।

    পেটের মেদ কমাতে করণীয়

    অতিরিক্ত খাওয়া এড়াতে ছোট প্লেটে খাবার নিন। খাবার প্লেটে নেওয়ার সময় পরিমাণের দিকে খেয়াল রাখবেন। এতে খাবার নষ্ট হওয়ার এবং প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা কমবে।

    পেটের অতিরিক্ত মেদ  মেদ জমার অন্যতম কারণ এই অভ্যাসগুলো। পেটের মেদ দ্রুত কমাতে সাহায্য করবে এমন ১০টি অভ্যাস নিয়ে  মেদ কমানো সম্ভব।

    • দ্রুত খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিন না
    • আনমনে খাওয়া পরিহার করুন
    • মানসিক চাপ মোকাবেলা করুন

    শুয়ে  পেটের সাথে ব্রেইনের কথাবার্তা  পূর্ণ মনোযোগ দিতে  দ্রুত খেতেই হয়, তাহলে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার প্লেটে নিয়ে সেটুকুই খেয়ে শেষ করুন। এতে  অপরবেলায় বেশি খাবার খাওয়া বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে।একারণে পেটের থাকে, তাহলে এখন থেকেই তা বদলে ফেলার চেষ্টা করুন।[৫] কোন বেলার খাবার বাদ দিবেন  ভোজন বা অস্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়া হয় 

    এক্ষেত্রে মূল বিষয় প্লেটের আকার নয়, বরং  এভাবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে যায়, ওজন বাড়ে এবং শরীরে 

    ৪. সৌজন্যবোধ থেকে বেশি খাবেন না

    দাওয়াত খেতে গেলে আমরা অনেক সময় সৌজন্যবোধ থেকে বেশি খেয়ে ফেলি। এক্ষেত্রে প্লেটে কেউ খাবার দিয়ে দিলে সেটা শেষ করে ওঠা কর্তব্য হিসেবে ধরে নেই। আবার বাইরে বন্ধুবান্ধব বা পরিচিতজনের সাথে দেখা হয়ে গেলে, পেট ভরা থাকার পরেও খাবার অর্ডার দেয়া হয়। এই অভ্যাসগুলো ওজন বাড়িয়ে মেদ-ভুঁড়ি জমানোর পেছনে ভূমিকা রাখে।

    দাওয়াতে আরেকটি প্রচলন হলো সবশেষে মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়া। অতিভোজন বা ‘ওভারইটিং’ হলে একদিকে যেমন শারীরিক অস্বস্তিতে পড়তে হবে, অন্যদিকে শরীরে মেদ জমার সম্ভাবনা থাকে। 

    পেটের মেদ কমাতে করণীয়

    এই চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত খাবার শরীরে যেসব বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে সেগুলো মাথায় রেখে কী পরিমাণ খাবার খাবেন সেটি ঠিক করে নিন। 

    যদি মিষ্টিজাতীয় খাবার খাবেন বলে ঠিক করেন তাহলে অন্যান্য খাবারগুলো পরিমিত পরিমাণে বা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে সামান্য কম খাবেন। মিষ্টিজাতীয় খাবার তেমন স্বাস্থ্যকর নয়, তাই যতটুকু না খেলেই নয় ততটুকুই খাবেন। 

    ৫. আনমনে খাওয়া পরিহার করুন

    খাওয়ার সময়ে অন্য কাজে ব্যস্ত থাকলে আপনি কতটুকু খাচ্ছেন সেদিকে সাধারণত মনোযোগ রাখা সম্ভব হয়ে ওঠে না। টিভিতে বা ফোনে খেলা, নাটক বা অন্য কিছু দেখতে দেখতে খাওয়ার অভ্যাস থাকলে পেটের মেদ হওয়ার বড় সম্ভাবনা থাকে। কারণ তখন আনমনে প্রয়োজনের চেয়ে বেশী খাওয়া হয়ে যেতে পারে।

    আবার অনেকের ক্ষুধা না লাগলেও টিভি দেখতে দেখতে কিছু একটা খেতে হবে এমন একটা অভ্যাস হয়ে যায়। এই খাবারগুলোও সাধারণত স্বাস্থ্যকর হয় না। দেখা যায়, ভাজাপোড়া, মুড়ি-চানাচুর এসব খাবার আমরা এক হাতে নিচ্ছি আর খাচ্ছি।

    পেটের মেদ কমাতে করণীয়

    এসব অতিরিক্ত, অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে আসে অতিরিক্ত ক্যালরি, যা থেকে শরীরে চর্বি জমার একটা ক্ষেত্র তৈরি হয়। তাই মেদ কমাতে কোন কোন সময়ে আপনি আনমনে খাবার খান সেটা খুঁজে বের করতে হবে। খাবারের দিকে পূর্ণ মনোযোগ, অর্থাৎ ‘মাইন্ডফুল ইটিং’ এর চর্চা করতে হবে।

    ৬. মানসিক চাপ মোকাবেলা করুন

    মানসিক চাপ বা স্ট্রেসের কারণেও শরীরে মেদ জমতে পারে। আমরা যখন দিনের পর দিন মানসিক চাপে ভুগি, তখন আমাদের শরীরে ‘কর্টিসল’ নামের একটি হরমোন নিঃসরণ হয়।[৮] এই হরমোন বৃদ্ধি পেলে অতিরিক্ত চিনি বা চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার প্রবল আকাঙ্ক্ষা জাগতে পারে।

    কর্টিসল হরমোন ওজন বাড়াতে, বিশেষ করে পেটের মেদ বাড়াতে আরও তিনটি কাজ করে—শরীরের অন্যান্য জায়গা, যেমন: পিঠ, উরু ও নিতম্বের চেয়ে পেটে চর্বি জমতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ‘সেন্ট্রাল অ্যাডিপোসিটি’ বলা হয়।

    গ্রেলিন নামের একটি হরমোনকে বাড়িয়ে দেয়। এই হরমোন বেশি বেশি ক্ষুধা অনুভব করার পেছনে দায়ী।

    লেপটিন নামের আরেক হরমোন নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। লেপটিন আমাদের পেট ভরে আছে এমন অনুভব করায়। 

    অর্থাৎ এই হরমোনের কারণে সহজে পেট ভরে না, বারবার ক্ষুধা লাগে, এবং বেশি খেয়ে ফেলার কারণে যে চর্বিটা তৈরি হয় সেটি শরীর মেদ হিসেবে জমিয়ে রাখে। 

    মেদ কমাতে তাই মানসিক চাপকে সময়মতো ও সঠিকভাবে মোকাবেলা করা গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, পছন্দের কাজ করা, মেডিটেশন ও প্রয়োজনে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে মানসিক চাপকে মোকাবেলা করতে হবে।

    ৭. অস্বাস্থ্যকর ঘুমের রুটিন বদলে ফেলুন

    কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবের সাথে ওজন বেড়ে যাবার একটি সম্পর্ক রয়েছে।[৯] এর পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। রাত জাগলে কিছু একটা খেতে ইচ্ছা করতে পারে। এভাবে খাওয়া অতিরিক্ত খাবারের ক্যালরি শরীরে মেদ হিসেবে জমা হয়, ঘুমিয়ে থাকলে সেই অতিরিক্ত ক্যালরি খাওয়া হতো না।

    রাত জেগে কাজ করার সময় খাবার হিসেবে সাধারণত ক্ষতিকর ফ্যাট বা চিনিযুক্ত খাবার, অথবা অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার বেছে নেওয়া হয়। খাবারটি স্বাস্থ্যকর কিনা তা নিয়ে তখন সাধারণত চিন্তা করা হয় না।

    ৮. সাদা চাল, সাদা আটার বিকল্প বেছে নিন

    সাদা চাল, সাদা আটা তৈরি করার সময় ফাইবার বা আঁশসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান ফেলে দেয়া হয়। ফাইবার খাবারকে আস্তে আস্তে হজম করতে সহায়তা করে। ফাইবার ফেলে দেয়ার কারণে খাবার গুলো দ্রুত হজম হয়, রক্তে ব্লাড সুগারের মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়।

    বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সাদা চাল ও সাদা আটার মত প্রক্রিয়াজাত শস্যদানা বেশি খাওয়ার সাথে মেদ জমার সম্পর্ক রয়েছে। অন্যদিকে লাল চাল বা ঢেঁকীছাঁটা চাল (কুড়াকাটা চাল হিসেবেও পরিচিত) এবং লাল আটার মতো গোটা শস্যদানা বেশি খাওয়ার সাথে পেটের মেদ কমানোর সম্পর্ক থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।

    পেটের মেদ কমাতে করণীয়

    লাল চাল বা লাল আটার স্বাদের সাথে অনেকেই অভ্যস্ত নয়, তাই প্রথমে এটি ভালো না-ই লাগতে পারে। কিন্তু এইটা পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করবে এবং স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী হবে। তাই আস্তে আস্তে হলেও এগুলো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। প্রয়োজনে শুরুর দিকে সাদা চাল বা সাদা আটার সাথে কিছুটা লাল চাল বা আটা মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

    ৯. ‘লো-ফ্যাট বা ফ্যাট-ফ্রি খাবার’ খাওয়ার আগে মোড়ক যাচাই করে নিন

    লো-ফ্যাট খাবার খেয়ে মেদ তৈরি হতে পারে এ কথা শুনে খটকা লাগতেই পারে। এর কারণ হলো, লো-ফ্যাট বা ফ্যাটমুক্ত খাবারকে সাধারণত স্বাস্থ্যকর মনে করা হলেও, এসব খাবারও কখনো কখনো অস্বাস্থ্যকর হতে পারে। 

    একটি খাবারকে লো-ফ্যাট হিসেবে তৈরি করার সময় সেখান থেকে ফ্যাট সরিয়ে বা কমিয়ে ফেললে অনেকের কাছেই তা কম সুস্বাদু মনে হয়। তাই খাবার সুস্বাদু করে বিক্রি বাড়াতে খাবার প্রস্তুতকারীরা সাধারণত এসব খাবারে অতিরিক্ত চিনি যোগ করে বাজারজাত করে থাকে।

    পেটের মেদ কমাতে করণীয়

    অতিরিক্ত চিনি প্রচুর ক্যালরি যুক্ত করে, খাবারটিকে অস্বাস্থ্যকর বানায় এবং ওজন বাড়ায়। তাই এখন থেকে লো-ফ্যাট বা ফ্যাট-ফ্রি কোনো খাবার কেনার আগে, তাতে চিনি যোগ করা হয়েছে কি না তা মোড়কের লেখা থেকে দেখে নিন।

    ১০. শুয়ে বসে না থেকে অ্যাকটিভ হোন

    শুয়ে-বসে থাকলে যে শরীরে মেদ জমে তা প্রায় সবারই জানা। এর খুবই সহজ সমাধান হলো সপ্তাহে ৫ দিন মাত্র ৩০ মিনিট করে দ্রুত হাঁটা। সারা সপ্তাহে মাত্র আড়াই ঘণ্টা ব্যায়াম করেই আপনি অনেক উপকার পাবেন। এতে রোগব্যাধির সম্ভাবনা কমবে, শরীরের চর্বির পরিমাণও কমবে।

    রাতারাতি চর্বি কমার আশা করবেন না। হাঁটা চালিয়ে যাবেন, সাথে কিছু ভারোত্তোলন ও অন্যান্য স্ট্রেংথ ট্রেনিং করতে পারলে আরও ভালো। অন্য কোনো ব্যায়াম আপনার জন্য উপযুক্ত হলে সেটিও করতে পারেন। অনেকদিন ধরে কোনো শারীরিক পরিশ্রম করেননি এমন ব্যক্তিও আমাদের শূন্য থেকে পাঁচ কিলোমিটার গাইডটি অনুসরণ করে দৌড়ানো শুরু করতে পারেন।

    জিমে না গিয়েও ঘরে বসে, কোন যন্ত্র বা ব্যায়ামের উপকরণের সাহায্য ছাড়াও মেদ কমানোর ব্যায়াম শুরু করা যায়। ইউটিউব বা গুগলে নিচের শব্দগুলো লিখে খোঁজ করলে ব্যায়ামের নির্দেশনাযুক্ত এমন অনেক ভিডিও পেয়ে যাবেন। এমন কিছু শব্দ হলো

    • Pushup 
    • Pullup
    • Plank
    • Squat

    আমরা আশা করবো এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি পেটের মেদ কমানোর উপায়গুলোর ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণা পাবেন। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন এই পরামর্শগুলো পেটের মেদ কমানোর পাশাপাশি কোমরের মেদ, উরুর মেদ, নিতম্বের মেদ ও মুখের চর্বি কমাতেও সাহায্য করবে।

  • ওজন বাড়ানোর সহজ উপায় | মোটা হওয়ার সহজ উপায় |

    ওজন বাড়ানোর সহজ উপায় | মোটা হওয়ার সহজ উপায় |

    ওজন কিভাবে বাড়ানো যায় সেটা অনেকেই জানতে চেয়েছেন।আজকের আলোচনায় একদম ভেঙ্গে ভেঙ্গে বলবো,ওজন বাড়াতে সকাল দুপুর ও রাতে কি খাবেন ,কোন ধরনের ব্যায়াম করবেন,আর তারপর বলব খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু সতর্কতা ,যেমন কিছু রোগের কারণে ওজন কম থাকতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন। অতিরিক্ত ওজন যেমন বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়, তেমনি স্বাভাবিকের চেয়ে ওজন কম হলে সেটিও শঙ্কার কারণ হতে পারে। সুষম খাদ্যাভ্যাস মানা ও নিয়মিত ব্যায়াম করা ওজন বাড়ানোর জন্য আবশ্যক। এখানে ওজন বাড়ে কোন খাবারে, ওজন বৃদ্ধির ব্যায়ামগুলো কি এবং ওজন বৃদ্ধির জন্য কোন বিষয়গুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

     ওজন বাড়ানোর ডায়েট চার্ট

    ওজন বাড়ানোর ডায়েটে সকালের নাস্তা, দুপুর ও রাতের খাবার এবং হালকা নাস্তা হিসেবে কোন খাবারগুলো খাওয়া যেতে পারে তা তুলে ধরা হলো। এই খাবারগুলো কেন, কিভাবে, এবং কী পরিমাণে খেতে হবে তা জানতে নিচে পড়ুন।

    সকালের নাস্তা

    ওজন বাড়ানোর জন্য সকালের নাস্তায় যে খাবারগুলো যুক্ত করতে পারেন, তার মধ্যে রয়েছে দুধ, কলা, ডিম ও খেজুর।

    দুধ: শরীরের প্রয়োজনীয় প্রায় সব ধরনের পুষ্টি উপাদানই দুধে পাওয়া যায়। দুধে প্রচুর ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন বি-১২ আছে। ক্যালসিয়াম শরীরের হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে সাহায্য করে, আর ভিটামিন বি-১২ রক্ত তৈরিতে এবং রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

    দুধ ওজন বাড়াতে বেশ সাহায্য করে। দুধ খাওয়ার একটি বড় সুবিধা হলো, অন্যান্য খাবারের সাথে খুব সহজেই এক গ্লাস দুধ খেয়ে নেয়া যায়। ওজন বৃদ্ধির জন্য সকালের নাস্তার পাশাপাশি যেকোনো বেলার খাবারের সাথে এক গ্লাস দুধ খাওয়া যেতে পারে। 

    কলা: কলায় ভিটামিন বি-৬ আছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার আছে, যা হজমে সাহায্য করে হার্টের রোগের ঝুঁকি কমানোর সাথে সম্পর্ক আছে। এছাড়া কলা খুব সহজলভ্য, বাজারে সারা বছরই পাওয়া যায়। খাওয়ার আগে কেটে নেওয়ার বা সময় নিয়ে ছিলিয়ে খাওয়ার ঝামেলা না থাকায়, সহজেই যেকোনো সময় ১টা বা ২টা কলা খেয়ে ফেলা যায়।

    ডিম: ডিমকে ‘প্রকৃতির মাল্টিভিটামিন’ বলা হয়। এর কারণ এতে বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। ডিমে থাকা ভিটামিন-এ চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ভিটামিন বি২ ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর রাখে। ডিমে জিংক নামের মিনারেল থাকে, যা দেহের রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ডিম আরও অনেক ভিটামিন ও মিনারেলে সমৃদ্ধ।

    ডিম সুলভ মূল্যে পাওয়া যায় এবং প্রায় সব খাবারের সাথেই খাওয়া যায়। তাই ওজন বৃদ্ধির জন্য সকালের নাস্তার সাথে ডিম খেয়ে নেওয়া যেতে পারে।

    খেজুর: এটি একটি অসাধারণ পুষ্টিগুণের ফল। এতে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়া এতে আয়রন আর ফলিক এসিড আছে, যা রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। খেজুরে ফাইবার বা আঁশ থাকে। ফাইবার হজমে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হার্টের রোগের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে। সকালে কয়েকটা খেজুর খেয়ে নিলে ওজন বাড়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। 

    এই খাবারগুলো শুধুমাত্র সকালেই খেতে হবে, বা প্রতিদিনই খেতে হবে — বিষয়টি এমন নয়। এখানে সহজলভ্য ও স্বাস্থ্যকর কিছু খাবারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই তালিকা থেকে একটি বা দুটি খাবার সুবিধামত যুক্ত করতে পারবেন আপনার ওজন বাড়ানোর ডায়েট চার্টে।

    দুপুরের খাবার

    ডাল: ডাল খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন বা আমিষ আছে। মুরগি, গরু ও খাসির মাংস থেকে যেমন প্রোটিন পাওয়া যায়, ডাল থেকেও তেমন প্রোটিন পাওয়া যায়। কিন্তু গরু-খাসির মাংসে কিছু ক্ষতিকর চর্বি থাকে, ডালের ক্ষেত্রে সেই ঝুঁকি নেই। এছাড়া আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজসহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এই সবগুলোই সুস্থ শরীরের জন্য প্রয়োজন। পাতলা ডালের তুলনায় ঘন ডাল খাওয়া ভালো। 

    আমাদের পেটের ভেতরে কোটি কোটি জীবাণু আছে। এর মধ্যে অনেক জীবাণু আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এগুলো রোগ প্রতিরোধ করা, ভিটামিন তৈরি থেকে শুরু করে শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশ নেয়। এই উপকারী জীবাণুগুলোকে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিশেষ কিছু খাবার আছে। এগুলোকে বলা হয় প্রিবায়োটিক খাবার। ডাল এক ধরনের প্রিবায়োটিক খাবার। ডালের পেটের ভেতরের উপকারী অণুজীবগুলোকে সুস্থ রাখে। তাই ওজন বাড়ানোর ডায়েট চার্টে ডাল রাখা ভালো। সকালের নাস্তায় কলার কথা বলা হয়েছে, কলাও এক ধরনের প্রিবায়োটিক অর্থাৎ, উপকারী জীবাণুর খাদ্য।

    টক দই: দুপুরের খাবার শেষে এক বাটি টক দই খেতে পারেন। টক দই দুধ দিয়ে বানানো, তাই এতে দুধের পুষ্টিগুলো থাকে। শুধু তাই নয়, টক দইতে অনেক উপকারী জীবাণু থাকে। টক দই খাওয়ার মাধ্যমে পেটের ভেতরের উপকারী অণুজীবগুলোর মত নতুন আরও অনেকগুলো উপকারী জীবাণু দেহে যোগ করতে পারেন। এগুলো পরে ক্ষতিকর জীবাণু থেকে আপনাকে সুরক্ষা দেবে।

    তবে মিষ্টি দই এড়িয়ে চলা গেলে ভালো। মিষ্টি দইতেও উপকারী জীবাণু আছে কিন্তু এতে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে চিনি যোগ করা হয়। অনেক চিনি, অস্বাস্থ্যকর তেল বা চর্বি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। এগুলো বেশী খেলে শরীরের মাংসপেশি না বেড়ে চর্বি বেড়ে যেতে পারে। এভাবে ওজন বাড়লেও তা স্বাস্থ্যকর হবে না, বরং উল্টো বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাবে। তবে মিষ্টি দই কখনোই খাওয়া যাবে না, তা নয়। হঠাৎ হঠাৎ পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে, তবে নিয়মিত না খাওয়াই ভালো।

    স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন বৃদ্ধির জন্য ওজন বাড়ানোর ডায়েটের পাশাপাশি অবশ্যই নিয়মিত ওজন বৃদ্ধির ব্যায়াম করতে হবে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সুস্থ থাকার জন্য সপ্তাহে অন্তত আড়াই ঘণ্টা ব্যায়াম করা প্রয়োজন। ব্যায়াম করার অভ্যাস একদমই না থাকলে অল্প অল্প করে শুরু করবেন। তবে শারীরিক সুস্থতার জন্য ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

    ওজন বাড়ানোর পূর্বে কিছু সতর্কতা

    ১। আপনার ওজন বৃদ্ধি দরকার কিনা সেটা বুঝে নিন। যাদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম, তাদের ওজন বাড়িয়ে স্বাভাবিকে আনা প্রয়োজন। কারণ স্বাভাবিকের চেয়ে অল্প ওজনে নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে— রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়া, অপুষ্টিতে ভোগা, সারাক্ষণ ক্লান্ত লাগা, মেয়েদের মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।  

    ২। কিছু রোগের কারণে ওজন কম হতে পারে। যেমন, থাইরয়েডের সমস্যা ও ডায়াবেটিস। আবার মানসিক রোগের কারণেও ওজন কমে যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে যথাযথ চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। তাই ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করার আগে প্রথমে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক বা মানসিক কোন অসুস্থতার কারণে আপনার ওজন কম কি না, সেটা তিনি খতিয়ে দেখতে পারবেন।

    ৩। যদি মনে হয় কোন সমস্যার কারণে ঠিকমতো খেতে পারছেন না, বা আগে যে পরিমাণ খাবার খেতেন সে তুলনায় এখন অনেক কম খাবার খেতে পারেন, তাহলে দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এগুলো গুরুতর কোন রোগের লক্ষণ কি না, সেটা তিনি যাচাই করবেন। এ ধরনের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে—

    • খাবারে অরুচি হওয়া
    • মুখে ঘা হওয়া
    • খাওয়ার পরে পেটে অস্বস্তি হওয়া
    • পেট ফাঁপা লাগা
    • ব্যথা করা
    • খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া
    • খাবার গলায় আটকে থাকে এমন মনে হওয়া
    • খাবার গেলার সময় ব্যথা হওয়া
    • অল্প খাবার খেয়েই পেট ভরে গেছে এমন মনে হওয়া
    • খুব ক্লান্ত লাগা
    • কিছুদিন পরপর অসুস্থ হয়ে পরা
    • পায়খানার অভ্যাসে পরিবর্তন আসা – যেমন আগের চেয়ে বেশী বার যাওয়া লাগছে

    বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ

    যদি মনে হয় কোন কারণ বা চেষ্টা ছাড়াই ওজন কমে যাচ্ছে, তাহলে হেলাফেলা না করে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এটি ক্যান্সারের একটা অন্যতম লক্ষণ, তাই এ ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।

    ৪। ওজন বাড়ানোর জন্য নিজে নিজে কোনো ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। কেউ কেউ টাকার বিনিময়ে মোটা হওয়ার ওষুধ বিক্রির চেষ্টা করে থাকে। এগুলো অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে। সম্ভব হলে একজন রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ানের সাথে পরামর্শ করে নিবেন।

    ৫। খাবারের পরিমাণ আর ধরণে পরিবর্তন আনলে অনেক সময় গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। খাবারের অভ্যাসে পরিবর্তনগুলো ধীরে ধীরে আনা উচিত। ফাইবারযুক্ত খাবার, যেমন, ফলমূল, ডাল, বাদাম ও শাকসবজি — এগুলো খাওয়ার পরিমাণ বাড়ানোর সাথে সাথে পানি এবং পানিজাতীয় খাবার খাওয়ার পরিমাণও বাড়াতে হবে। এরপরও যেসব খাবার খাওয়ার পরে গ্যাসের সমস্যা বেশি দেখা দেয় বলে মনে হয়, সেগুলো এড়িয়ে চলাই উত্তম।

    মুরগির মাংস: দুপুরের খাবারে মুরগির মাংস রাখা যায়। সাধারণত যদি এক টুকরো খাবার অভ্যাস থাকে তাহলে ওজন বাড়াতে ২ টুকরো করে খাওয়ার চেষ্টা করুন। অনেকে গরু-খাসির মাংস বেশী করে খাওয়ার পরামর্শ দিতে পারে, তবে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। গরু-খাসির মাংস খেয়ে ওজন বাড়ানো সম্ভব হলেও এগুলোর অস্বাস্থ্যকর চর্বির কারণে নানা ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে। তাই ওজন বাড়ানোর সময়েও এগুলো পরিমিত পরিমাণে খাওয়াই ভালো। গরু-খাসির মাংস থেকে যেই প্রোটিন আসতো, মুরগির মাংস, ডিম ও ডাল থেকে আপনি তা অনায়াসেই পেয়ে যাবেন। 

    রাতের খাবার

    দুপুরের  জন্য যেসব খাবার উল্লেখ করা হয়েছে, ওজন বৃদ্ধির জন্য সেগুলো রাতের খাবারের সময়েও প্রযোজ্য। দুপুরে ব্যস্ততার বা বাসার বাইরে থাকার কারণে যদি কিছু বাদ পড়ে যায়, তা রাতের খাবারে যোগ করে নেওয়া যেতে পারে।

    হালকা নাস্তা বা স্ন্যাকস

    বাদাম: ওজন বাড়ানোর জন্য একটা খুব ভালো নাস্তা হচ্ছে বাদাম। চিনাবাদাম, কাঠবাদাম, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম — আপনার সুবিধামত যেকোনো ধরনের বাদাম খাওয়া যাবে। বাদামে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট আছে, অনেক ধরনের মিনারেল, ভিটামিন, ফাইবার আছে। এটিও একটা প্রিবায়োটিক খাবার, অর্থাৎ পেটের ভেতরে থাকা উপকারী জীবাণুকে সুস্থ রাখে। তাই ওজন বাড়ানোর জন্য নাস্তায় কয়েকটা বাদাম খেয়ে নিতে পারেন।

    ওজন বৃদ্ধিতে দুপুর-রাতের খাবারের পরে বাদাম খাওয়া যায়। কেনার সময়ে খেয়াল রাখতে হবে যেন এতে কোনো উপাদান মেশানো না থাকে যেমন চিনি, লবণ ইত্যাদি। বিশেষ করে যারা দেশের বাইরে থাকেন, তারা বিষয়টি খেয়াল রাখবেন। কারণ বাজারে অনেক ধরনের চিনি, লবণ মেশানো বাদাম প্যাকেটে কিনতে পাওয়া যায়। 

    কিসমিস: নাস্তার জন্য বাদামের সাথে কিসমিস মিশিয়ে খেতে পারেন। কিসমিস যেহেতু আঙ্গুর ফল শুকিয়ে বানানো হয়, অল্প পরিমাণ কিসমিসেই অনেক ভিটামিন আর মিনারেল থাকে। তবে কিসমিস খেলে কারও কারও দাঁতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেটা ঠেকাতে শুধু কিসমিস না খেয়ে বাদাম বা টক দইয়ের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। কিসমিস খাবারে যোগ করতে পারলে ওজন বাড়াতে সেটা অনেক সহায়তা করবে। 

    বিভিন্ন ধরনের বীজ: ওজন বাড়ানোর আরেকটা উপায় হল খাবারের সাথে বিভিন্ন ধরনের বীজ যুক্ত করা। সম্ভব হলে মিষ্টিকুমড়ার বিচি, সূর্যমুখীর বিচি, তিসির বীজ, তিলের বীজ — এগুলো ভাত বা তরকারির ওপর হালকা করে ছিটিয়ে খেতে পারেন। একেকটা বীজ একেক ধরনের পুষ্টি বহন করে।

    যারা দেশের বাইরে থাকেন তারা ফলের মধ্যে আভোকাডো খেতে পারেন। এতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট আছে। আমাদের দেশে এই ফলটা সহজে পাওয়া যায় না, পেলেও দাম অনেক বেশি হয়

    ওজন বৃদ্ধির জন্য যেসব খাওয়া উচিত নয়

    সাগু: সাগুর প্রায় পুরোটাই শর্করা। অর্থাৎ শুধুমাত্র এক ধরনের পুষ্টি উপাদান বেশি পরিমাণে থাকে। ১০০ গ্রাম সাগুদানায় প্রোটিন আর ফ্যাটের পরিমাণ ১ গ্রামের চেয়েও কম, আর ভিটামিন ও মিনারেলের পরিমাণও নগণ্য। তাই এটি খুব পুষ্টিকর একটা খাবার নয়। সাগুদানা নিয়মিত খেলে ওজন বাড়তে পারে, তবে পুষ্টির ঘাটতি থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর চেয়ে যেসব খাবারে ওজন বাড়ে আর পুষ্টিও অনেক থাকে, সেগুলো খেয়ে ওজন বাড়ানো শ্রেয়।

    কাস্টারড-পুডিং: এগুলোতেও সাধারণত প্রচুর পরিমাণে চিনি দেয়া থাকে। অতিরিক্ত চিনি বা তেল-চর্বি যুক্ত খাবার যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, সেটা ওজন বাড়ানোর সময়েও এড়িয়ে চলা ভালো। নাহলে শরীরে চর্বি জমে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।

    যদি চিনি ছাড়া শুধু দুধ, ডিম ও ফলমূল দিয়ে কাস্টারড বা পুডিং বানিয়ে খেতে চান, সেটা খেতে কোনো সমস্যা নেই।

    নিরাপদে থাকবেন।

  • নারীদের পিরিয়ডে টিকার নতুন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

    নারীদের পিরিয়ডে টিকার নতুন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

    যুক্তরাজ্যে এ পর্যন্ত ১৩ হাজারের বেশি মহিলা জানিয়েছেন যে টিকা গ্রহণের পরে তাদের মাসিকের পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে জানিয়েছেন যে টিকা গ্রহণের পর আগের চেয়ে বেশি রক্তপাত হয়েছে। মাসিকের এই পরিবর্তন টিকার কারণেই হয়েছে কিনা তা আমরা নিশ্চিত নয়। তবে এটা টিকার কারণেও হতে পারে। আগের কিছু টিকার ক্ষেত্রে এমনটা দেখা গেছে, যেমন ফ্লু ভ্যাকসিন তারপর মেয়েদের জরায়ু মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে যে টিকা দেয়া হয় এই টিকাগুলো নেয়ার পরে মাসিকে সাময়িক কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।

    এর কোনটাই লং টার্ম নয় কিছুদিন পরেই ঠিক হয়ে যায়। টিকা নেওয়ার  পরে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম রিঅ্যাকশন শুরু করে, প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে যাতে করে আসল করোনাভাইরাস যদি আমাদের শরীরে তাহলে সে যাতে মোকাবেলা করতে পারে।এই যে যখন আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম তৈরি হচ্ছে তখন আমাদের শরীরে কিছু পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।যেমন একটু জ্বর আসতে পারে,কাঁপুনি লাগতে পারে,মাথা ব্যথা হতে পারে। আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম শরীরে অন্যান্য জায়গায় যেমন আছে আমাদের জরায়ুতে অর্থাৎ যেখান থেকে মাসিকের রক্ত বের হয় সেখানেও কিন্তু ইমিউনিটি সিস্টেম আছে,রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আছে। শরীরে অন্যান্য জায়গায় যেমন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে জরায়ুতে যে ইমিউনিটি সিস্টেম আছে সেখানেও কিছু পরিবর্তন আসতে পারে এবং জরায়ুর ইমিউনিটি সিস্টেমের পরিবর্তনের ফলে মাসিকের পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। 

    মাসিকের পরিবর্তনের কথা শুনে অনেকে ভয় পান,যে টিকা নিলে  কি গর্ভধারণের ক্ষমতা কমে যাবে?বাচ্চা নিতে সমস্যা হবে?

    একদমই না। ওই যে দুটো টিকার কথা বললাম ফ্লু টিকা আর এইচপিভি টিকা অর্থাৎ জরায়ু  মুখের ক্যান্সারের এর টিকা যেগুলা গ্রহণ করার পর  আমরা অতীতে দেখেছি যে মাসিকে সাময়িক পরিবর্তন আসতে পারে,

    এর কোনটাই গর্ভধারণে ক্ষমতা কমায় না,বাচ্চা নিতে কোন সমস্যা সৃষ্টি করে না। হাজার হাজার দম্পতির  উপরে করা খুব ভালো গবেষণা থেকে আমরা এটা জানি। 

    এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন,বুঝলাম আগের টিকায় সমস্যা হয় নাই করোনা  টিকায় বাচ্চা নিতে সমস্যা হবে না এমন কোন প্রমাণ আছে?

    উত্তর হচ্ছে, আছে,

    করোনা টিকা যখন গবেষণা চলছিল তখন প্রাথমিকভাবে সীমিত কিছু মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছিল। যে মহিলারা ট্রায়াল এ অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদেরকে বলা হয়েছিল যে ট্রায়াল চলাকালীন সময় আপনারা গর্ভবতী হবেন না। নিষেধ করার পরেও যুক্তরাজ্যে চারটি টায়ালে মোট ৬৫ জন গর্ভবতী হন। আপনারা জানেন যে ট্রায়ালের সময় অংশগ্রহণকারীদের কে দুইদলে ভাগ করা হয়, একদলকে টিকা দেয়া হয় আর আরেক দলকে টিকার মতোই অন্য একটা কিছু স্যালাইন দেয়া হয়।তো টিকা যদি গর্ভধারণের সমস্যা সৃষ্টি করত তাহলে যে দল টিকা পেয়েছে তাদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে অল্প সংখ্যক নারী গর্ভবতী হওয়ার কথা। কিন্তু দেখা গেছে ৬৫ জনের মধ্যে প্রায় সমান সংখ্যক নারী দুই দলে ছিলেন। আর এই ট্রায়াল এর মধ্যে কোটি কোটি  মানুষের মধ্যে টিকা দেয়া হয়েছে যারা টিকা পেয়েছে তাদেরকে গবেষণায় এনে দেখা হয়েছে  টিকার কারণে গর্ভধারণে কোন সমস্যা হয় এমন কোন প্রমাণ মিলেনি।তাহলে এটা কোন চিন্তার বিষয় নয়।যেকোনো ওষুধে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে তাই উপকার আর ঝুঁকির হিসাব কষাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। টিকার মাধ্যমে আমরা করোনা ঠেকানোর চেষ্টা করছি। আমরা জানি গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে করোনা গুরুতর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর করোনা থেকে মৃত্যুর সম্ভাবনা তো রয়েছেই। তো টিকার উপকারিতা ও ঝুঁকির হিসাব করে আমি নির্দ্বিধায় টিকা নিয়েছি, আমার পরিবার ও রোগীদের জন্য আমার একই পরামর্শ।

    নিরাপদে থাকবেন।

  • কোন টিকা বেস্ট? 

    কোন টিকা বেস্ট? 

    কোন টিকা বেস্ট,কোন টিকার কার্যকারিতা সবচেয়ে বেশি? কোন টিকা নিলে আমার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে? এমন প্রশ্ন অনেকেই করছে। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর সংক্ষেপে দেয়ার চেষ্টা করব। 

    আপনারা বিভিন্ন সময় টিকার কার্যকারিতা শুনেছেন।

    ফাইজার এর টিকার কার্যকারিতা শুনেছেন ৯৫ শতাংশ,মর্ডানার টিকার কার্যকারিতা শুনেছেন ৯৪ শতাংশ, অক্সফোর্ডটিকার কার্যকারিতা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংখ্যা শুনেছেন। আমরা সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের ট্রায়াল থেকে জানি অক্সফোর্ডসট্রা যানসা টিকার কার্যকারিতা এসেছে ছিয়াত্তর শতাংশ।চায়নার সাইনো ফার্মা টিকার কার্যকারিতা এসেছে ৭৯  শতাংশ। johnson and johnson টিকার কার্যকারিতা ৬৭%। Novavax  টিকার কার্যকারিতা ৯০%। এই যে সংখ্যা গুলো বললাম সংখ্যা গুলো শুনে মনে হতে পারে যে, যে টিকার কার্যকারিতা ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ সে টিকা গুলোই বোধহয় সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা দিবে,সে টিকাগুলোই বোধহয় বেস্ট। কিন্তু এই সংখ্যাগুলো দেখে এখনো বলা যাবে না একটা টিকা আর একটা টিকার চেয়ে ভালো কাজ করবে। এই সংখ্যাগুলো দেখে বোঝা যাবে না বা বলা যাবে না যে একটা টিকা আরেকটা টিকার চেয়ে ভালো কার্যকর কেন বলছি বুঝিয়ে বলি?

    এই যে সংখ্যাগুলো আমরা যে বলছি এগুলো ট্রায়াল থেকে নেয়া হয়েছে।

    এই ট্রাইলগুলো করেছে বিভিন্ন কোম্পানি। এখন একটা কোম্পানি যে ক্রাইটেরিয়া বলেছে গুরুতর করোনা আরেকটা কোম্পানির তার ট্রায়াল-এ একই ক্রাইটেরিয়া দিয়ে ডিফাইন করেনি। তাহলে তো এই দুটো জিনিস তুলনা করা গেল না। তারপর তারা কোন কোন ট্রায়াল-এ গুনেছে শুধুমাত্র গুরুতর করোনা রোগীর সংখ্যা। কোন ট্রায়াল-এ গুনেছে মৃদু  করোনা রোগীর সংখ্যা। এখন যার করোনা মৃদু আর যার করোনা গুরুতরএই দুটো জিনিস একই রকম জিনিস তো হলো না তো এখানেও আমাদের তুলনাটা আসে না। তারপর এই যে গুরুতর করোনা বা মৃদু করোনা টিকা নেয়ার কয়দিন পরে দেখা গেছে সেখানে অনেক তফাৎ আছে।টিকা তৈরিতে এগিয়ে থাকা তিনটি বড় প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এর মধ্যে ফাইজার ও মডার্না আরএনএ প্রযুক্তির টিকা তৈরি করেছে। এ প্রযুক্তিতে এতে দ্রুত টিকা তৈরি করা সম্ভব।

    এতে ভাইরাসের জেনেটিক কোডের ক্ষুদ্র একটি অংশ দেহে প্রবেশ করানো হয়। এতে করোনাভাইরাসের একটি অংশ তৈরি করতে শুরু করে এবং শরীর এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ প্রযুক্তির টিকা যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন পেয়েছে। অন্যদিকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকাটি আলাদা। এতে নিরীহ ভাইরাস ব্যবহার করে শরীরে জেনেটিক উপাদান প্রবেশ করানো হয়। এ টিকাটি যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে অনুমোদন পেয়েছে।কোন কোন টায়াল এ গুনেছে যে দুই ডোজ টিকা দেয়ার ১৫ দিন পরে কেমন কার্যকারিতা দেখা গেছে। আবার কোন ট্রায়াল-এ দেখা গেছে প্রথম ডোজ দেয়ার ২৮ দিন পরে কেমন কার্যকারিতা দেখা গেছে।

  • কার্ডিয়াক এরেস্ট হলে করনীয়

    কার্ডিয়াক এরেস্ট হলে করনীয়

    আপনার চোখের সামনে কেউ হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল।

    এর কারণ হতে পারে,

    কার্ডিয়াক এরেস্ট বা অন্য কোন অসুস্থতা।

    যদি কার্ডিয়াক এরেস্ট হয় তাহলে সে চোখের সামনে কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যাবে।তবে  আপনি যদি কিছু ফার্স্ট এইড  জানেন তাহলে হয়তো ওই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন হাসপাতালে নেয়া পর্যন্ত। প্রথমেই বুঝে নেই তার cardicate arrest হয়েছে নাকি অন্য কোন অসুস্থতা হয়েছে। আমাদের হার্টে একটা ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম আছে যার কারনে হার্ট সব সময় বিট করতে থাকে আর সারা শরীরে রক্ত পাম্প করতে থাকে। যখন ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেমে গুরুতর সমস্যার ফলে  হার্ট শরীরের রক্ত পাম্প করা বন্ধ করে দেয় সেটাকে বলে কার্ডিয়াক এরেস্ট।

    কার্ডিয়াক এরেস্ট  হওয়ার কমন কারণ হলো হার্ট এটাক, হার্টে বংশগত সমস্যা ইত্যাদি। একটা উদাহরণ দিয়ে এখন সামনে আগায়, ধরুন আপনার সামনে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছেন কেউ সে বংশগতভাবে হার্টে একটা সমস্যা নিয়ে জন্মেছে কিন্তু এটা সে জানতো না। কখনো কোন সমস্যা হয়নি হঠাৎ করে সে আজকেই বংশগত সমস্যার কারণে তার হার্টে ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেমে গোলমাল তৈরি হলো। নানা জায়গায় ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম ফায়ার করছে। ফলে তার হার্ট স্বাভাবিকভাবে সংকোচন প্রসারণ না হয়ে  কাপতে  শুরু করেছে। এমন কাঁপলে তো আর হার্ট শরীরে  রক্ত পাম্প করতে পারে না। ফলে ব্রেনেও রক্ত যাচ্ছে না শ্বাস প্রশ্বাস অস্বাভাবিক হয়ে এসেছে এবং সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেছে। এই সময় যে সে পড়ে গেছে তার মনে থাকবে না কারণ ওর ব্রেনে রক্ত যাচ্ছে না অক্সিজেন যাচ্ছে না ফলে ব্রেনের কিছু কোষ মারা যেতে শুরু করেছে। এই অবস্থায় আপনার কাজ শুরু। সে ব্যক্তিকে বাঁচানোর জন্য ওর হার্টের কাজটা আপনি নিজের হাতে তুলে নিবেন। সে ব্যক্তিটির বুকে জোরে জোরে  চাপ দিয়ে ব্রেনে রক্ত চলাচল করাবেন যাতে তার ব্রেন ভালো থাকে।আপনি এ কাজটি করলে ওই ব্যক্তিটি বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে দুই থেকে তিন গুণ। এটা কে বলে কার্ডিওপুলোমেনারি রিয়শ্বাসসিয়েশন বা সিপিআর। কিভাবে করবেন পুরোটা বোঝাচ্ছি? যখন দেখলেন ওই ব্যক্তিটি পড়ে গেল। তখন আপনাকে খুব দ্রুত তিনটা কাজ করতে হবে।প্রথমে এক ওই ব্যক্তির কাঁধে হালকা করে ঝাঁকি দিয়ে জোরে আওয়াজ করে জিজ্ঞেস করবেন তুমি কি ঠিক আছো? সে কোন সাড়া দিল না নড়াচড়া করলো না অর্থাৎ অজ্ঞান হয়ে গেছে। 

    দুই, তখন আপনার সাথে আরো কয়েকজন মানুষ লাগবে তাই চিৎকার করে আশেপাশের মানুষেকে বলুন জরুরী সেবা নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য এবং ডিফিবরিলেটার যন্ত্রটা নিয়ে আসছে এটাকে অনেকে AED  বা p a d  নামে চেনে।যাদেরকেই বলবেন খুব দ্রুততার সাথে কাজগুলো করতে বলবেন।যদি আশেপাশে কেউ না থাকে তাহলে মোবাইলে তাড়াতাড়ি 999 নাম্বারে বা আপনি যে অঞ্চলে আছেন সেই অঞ্চলে জরুরি সেবা নাম্বারে কল দিয়ে কারণ করে ফোনটা পাশে রাখুন। 

    তিন,

     এক আর দুই নাম্বার কাজ করার সাথে সাথে খেয়াল করুন ব্যক্তিটির  শ্বাস প্রশ্বাস কেমন আছে বুক উঠানামা করছে। বাতাস আসা-যাওয়া করছে। সবার শ্বাস-প্রশ্বাস একেবারে বন্ধ হয়ে যায় না। পারডেড অ্যারেস্ট হলে শ্বাস প্রশ্বাস কেমন হতে পারে দেখিয়ে দিচ্ছি intervals between gasps  increase।

    যদি ব্যক্তিটি আপনার কথায় সাড়া না দেয় আর শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক না হয় বন্ধ হতে হবে এমন কথা নয়। তাহলে ধরে নিবেন কার্ডিয়াক  এরেস্ট হয়েছে। এখনই সিপিআর শুরু করতে হবে। ধরেন আপনি বুঝতে পারছেন না তার স্বাভাবিক নাকি। মনে হচ্ছে শ্বাস আছে কিন্তু স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক সেটা বুঝতে পারছেন না কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কিনা, কিন্তু তাও আপনি সিপিআর শুরু করবেন। বুকে চাপ দিলে ওই ব্যক্তিটির ক্ষতি হবে এমন দুশ্চিন্তা করা দরকার নেই। আপনি বুকে চাপ দেয়া শুরু করবেন। ব্যক্তিটি সুস্থ থাকলে সে নিজেই আপনাকে সরিয়ে দিবে।

    সব গাইড লাইনেই অ্যামেরিকান হার্ট  অ্যাসোসিয়েশন ,ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন, রিসাসিয়েসন কাউন্সিল ইউকে, ক্ষতির দুশ্চিন্তা না করে সিপিআর দেওয়ার শুরু করতে বলে। যদি ওই ব্যক্তিটির কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে থাকে আপনি কিছু না করলে কয়েক মিনিটের মধ্যে সে মারা যাবে। তাই ব্যক্তিটির ক্ষতি হবে এই চিন্তা বাদ দিয়ে আপনি সিপিআর শুরু করবেন যত দ্রুত পারেন।

    এখন সিপিআর দেয়ার নিয়মটা বলি। 

    ব্যক্তিটির বুকের পাশে হাঁটু গেড়ে বসবেন। বুকের ঠিক মাঝখানে এক হাতের তালু নিচে অংশ রাখবেন আরেক হাতের তালু তার উপরে বসাবেন তারপর আঙ্গুলগুলো একটার আরেকটা ভিতরে ঢুকাবেন তারপর রোগীর বুকের উপর ঝুঁকে আসবেন যাতে আপনার কাঁধ আর হাতের তালু একটা সোজা লাইন বরাবর থাকে। হাতটা এভাবে থাকলে আপনি ঠিকমতো চাপ দিতে পারবেন। তারপর রবিটির বুকে চাপ দিবেন যাতে অন্তত ৫ সেন্টিমিটার দেবে যায়। ৫ সেন্টিমিটার কিন্তু অনেকটুকু সিপিআর দেয়ার অটোমেটিক মেশিন আমরা হাসপাতালে ব্যবহার করি। বেশ জোরে জোরে চাপ দিতে হয় এবং খুব দ্রুত করতে হয়। প্রতি মিনিটে 100 থেকে ১২০ বার। এক সেকেন্ডে প্রায় দুইবার চাপ দিতে হয়। এই কাজটা রোগীর জীবন বাঁচাতে অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বুকে চাপ দিয়ে দিয়ে রোগীর  হার্টে আর ব্রেন এ  আপনি রক্ত পাঠাচ্ছেন। দুইটা চাপ দেয়ার মাঝখানে খেয়াল রাখবেন রোগীর বুক যাতে আবার পুরোপুরি  আগের অবস্থানে ফিরে আসে এতে রক্ত চলাচল করবে। সারাক্ষণ বুকে চাপ দিয়ে রাখবেন না, এক চাপ দিয়ে তারপর  হালকা করে ছেড়ে দেবেন দুই চাপের মাঝখানে বুকের ওপর ভর দিবেন না। একজন মানুষ সাধারণত দুই মিনিটের বেশি ভালোভাবে বুকে চাপ দিতে পারেনা। তাই দুই মিনিট পরপর বা তার আগেও যদি কেউ ক্লান্ত হয়ে পড়ে মনে হচ্ছে যে ,৫ সেন্টিমিটার দাবাতে পারছে না,তাহলে আরেকজন তার জায়গা নেবে। জায়গা বদল করতে যাতে সবচেয়ে কম সময় নষ্ট হয় সেই চেষ্টা করবেন। ৩০ বার বুকে চাপ দেয়ার পর দুইটা rescue breath  দিতে হয় তারপর আবার ৩০ বার বুকে চাপ আবার মুখে rescue breath এভাবে চালিয়ে যেতে হয়। rescue breath কিভাবে দিতে হয়? 

    এক হাত দিয়ে রোগীর মাথা হালকা নিচু করে আরেক হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে থুতনি উঁচু করে, যেই হাত মাথায় সেটা দিয়ে রোগীর নাক বন্ধ করে তার মুখের সাথে মুখ লাগিয়ে এক সেকেন্ড ধরে শ্বাস ছেড়ে রোগীর ফুসফুসে বাতাস ঢোকানোর চেষ্টা করতে হয়। তবে অনেকেই rescue breath দিতে পারেন না বা করতে স্বাচ্ছন্দবোধ  করেন না তখন এটার দরকার নেই। rescue breath না পাড়ার  কারণে সিপিআর দেয়া থেকে দয়া করে বিরত থাকবেন না। 

    AED  এ যন্ত্রটির মাধ্যমে রোগীকে ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়। হার্ট শুধু কাঁপছে পাম্প করতে পারছে না,ইলেকট্রিক শক দিয়ে হার্টের এলোমেলো কাপাকাপি মুহূর্তের জন্য বন্ধ করা হয়। হার্ট যদি তখনো ভালো থাকে হার্টের ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম আবার স্বাভাবিকভাবে বিট করা শুরু করতে পারে। 

    উন্নত দেশগুলোতে পাবলিক প্লেসে যেমন শপিং মলে, হোটেলে,স্কুলে এই যন্ত্র বিভিন্ন জায়গায় রেখে দেয়া হয় যাতে করে প্রয়োজনে দ্রুত ব্যবহার করা যায়। এগুলো যে কেউ ব্যবহার করতে পারে পাবলিকপ্লেস থাকা Defibrillator যন্ত্রটি ধাপে ধাপে বলে দেয় কখন কি করতে হবে। রোগীর প্রয়োজন না হলে ইলেকট্রিক শক দেয়না। তাই এখানেও রোগীর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই গরম বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুন বেড়ে যায়। আমাদের দেশে সাধারণত এই যন্ত্র থাকে না। Defibrillator যন্ত্রটি হাতে থাকলে ব্যবহার করবেন আর না থাকলে সিপিআর চালিয়ে যাবেন। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে কখনো কখনো Defibrillator ব্যবহার করা হয় না সিপিয়ার যথেষ্ট। 

    যতক্ষণ না জরুরি সেবা থেকে সাহায্য আসে বা রোগীর জ্ঞান ফিরে আসে ততক্ষণ  সিপিআর চালিয়ে যাবেন।আর এসব কিছু আগে দেখে নেবেন জায়গাটি আপনার জন্য নিরাপদ কিনা রাস্তার মাঝখানে কেউ হঠাৎ করে অজ্ঞান হলে আপনি কিছু না দেখে ওইখানে ছুটে গেলে কোন দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তারপরে আগাবেন। তাহলে শিখে নিলেন এ পরিস্থিতিতে আপনার কি কি করা উচিত। বুলেট পয়েন্টে আবারো মনে করিয়ে দেই। 

    নিরাপদ কিনা দেখে নিন। 

    কাঁধে ঝাঁকুনি দিয়ে দেখুন জ্ঞান আছে কিনা 

    সাহায্য ডাকুন। 

    শ্বাস প্রশ্বাস দেখুন। 

    দ্রুত সিপিআর শুরু করুন। 

    সম্ভব হলে rescue breath দেন।

    Defibrillator ব্যবহার করুন, 

    আমাদের স্কুল গুলোতে এসব শেখালে সবচেয়ে ভালো হতো। আশা করছি এরকম বিপদে আপনাদের যাতে কখনোই পড়তে না হয়। যদি বিপদ আসেও যতটুকু মনে থাকে ততটুকু দিয়েই চেষ্টা করবেন আপনার চেষ্টাতে হয়তো একটা জীবন বেঁচে যেতে পারে। 

    নিরাপদে থাকবেন।

  • করোনার নতুন লক্ষণগুলো জেনে নিন

    করোনার নতুন লক্ষণগুলো জেনে নিন

    করোনার লক্ষণে কিছু পরিবর্তন এসেছে। 

    কিছু লক্ষণ আমরা আগে থেকে অনেক বেশি দেখতে পাচ্ছি ,এটা জানা গুরুত্বপূর্ণ কারণ না জানলে আপনার অবস্থা যদি খারাপ হয়ে যায় তাহলে বুঝতে পারবেন না যে কি কারণে অবস্থা খারাপ হচ্ছে। আগে থেকে কোন প্রস্তুতি থাকবে না কোন পরিকল্পনা থাকবে না ,আর না জানা থাকলে অজান্তে আপনি আপনার আপনজন পরিবার পরিজন যারা হয়তো বয়স্ক অন্যান্য অসুস্থতা আছে যার ফলে করোনা অনেক ভয়াবহ হওয়া সম্ভাবনা বেশি। যাদেরকে নিজের অজান্তে করোনাই  আক্রান্ত করে ফেলতে পারেন। আচ্ছা, তাহলে লক্ষণগুলোতে আসি। 

    করোনার যে লক্ষণ গুলো আপনারা সবচেয়ে বেশি জানেন সেগুলো হলো, জ্বর,খুসখুসে কাশি,অর্থাৎ যে কাশির সাথে কফ বের হয় না  শুষ্ক কাশি ,কাশি হতে থাকে এমন অবস্থায় কে বোঝায়, আর ঘ্রাণ শক্তি এবং মুখের স্বাদটা বদলে যাওয়া বা হারিয়ে যাওয়া। এগুলো এখনো আমরা দেখছি কিন্তু, এগুলোর চেয়ে বেশি কিছু লক্ষণগুলো আমরা দেখতে পাচ্ছি।

    এগুলো কি কি? 

    প্রথমটা হলো মাথা ব্যথা। মাথাব্যথা করনার একদম শুরুর দিকের লক্ষণ। খুব কমই রোগীরা আমাদের কাছে এসে বলছে ১০ জন  করনা রোগীর মধ্যে সাতজনই বলেছে যে মাথাব্যথা তাদের লক্ষণ। এখন এখানে একটা সমস্যা হল যে মাথা ব্যাথা খুব কমন একটা সমস্যা। যাদের হয়তো একটু ঘুম কম হয় খিদা লেগে থাকে সময় মতো খাবার গ্রহণ না করলে একটু স্ট্রেসের মধ্যে থাকলে বা ওয়েদার পাল্টায় তখন অনেকেরই মাথাব্যথা শুরু হয়।সব মাথাব্যথায় করোনার মাথাব্যথা না। কিন্তু মাথা ব্যথা করোনার একটা খুব কমন লক্ষণ।

    সাধারণ তো করোনার মাথাব্যথা গুলো মাথার দুই পাশেই হয়,ব্যথা মাঝারি থেকে তীব্র হয় এবং সাধারণত যে ওষুধগুলো খেলে আপনার মাথা ব্যথা কমে এই ঔষধ গুলো এই মাথা ব্যথায় লাভ হয় না। দেশে যেহেতু করোনা খুব বেশি ছড়াচ্ছে তাই মাথা ব্যথা হলে খুব দ্রুত করোনা  টেস্ট করিয়ে নেয়া ভালো। দ্বিতীয় যে লক্ষণটা আমরা সবচেয়ে বেশি দেখতে পাচ্ছি সেটা হল গলা ব্যথা। আমরা আগেও গলা ব্যথা দেখতাম কিন্তু এখন জ্বর খুসখুসে কাশি চেয়ে  বেশি দেখতে পাচ্ছি গলা ব্যথা।এটা বিভিন্ন কারণে হতে পারে কিন্তু করোনাও একটা কারণ। তৃতীয় যে লক্ষণটা আমরা সবচেয়ে বেশি দেখতে পাচ্ছি সেটা হলো নাকে সর্দি। নাকে সর্দিও ওয়েদার এর কারনে হতে পারে এলার্জির কারণে হতে পারে আবার করোনার কারণেও হতে পারে।

    তাহলে তিনটা লক্ষণ কি কি? 

    মাথা ব্যথা ,গলা ব্যথা ,ও নাকে সর্দি।এখন চিন্তা করেন মাথা ব্যথা গলা ব্যথা ও নাকটে সর্দি হলে আমরা সাধারণত চিন্তা করি হয়তো একটু ঠান্ডা লেগেছে সেটা আমরা খুব সিরিয়াসলি নেই না। এই লক্ষণ গুলো দেখা দিলে আমরা কিন্তু সচরাচর চিন্তা করি না করোনার মত একটা ভয়ংকর রোগ হতে পারে। কিন্তু এখন আমরা এই লক্ষণগুলো খুব কমন দেখছি।জ্বর কাশি নাকের ঘ্রাণ হারানো এর চেয়ে বেশি কমন দেখছি। তাই এ লক্ষণ গুলো দেখা দিলে খুব দ্রুত করানোর টেস্ট করে নিবেন। করনা টেস্টটা করালে আপনি যদি দেখেন আপনার করোণা আছে আপনি নিজের জন্য যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া দরকার। নিজে যে খেয়াল রাখার দরকার সেটা ঠিকভাবে খেয়াল রাখতে পারবেন। আপনার অক্সিজেনটা মাপতে পারবেন এবং আপনার আপনজন পরিবার-পরিজন। তাদেরকেও সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।। যদি নেগেটিভ আসে তাহলে তো ভালো চিন্তা নেই। যদি পজিটিভ আসে তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো একটা ভালো মানের পালস অক্সিমিটার কিনে নেয়া এবং আপনার অক্সিজেন এর রেজাল্ট দিনে কয়েকবার মেপে দেখা।

Call Now Button