Category: Uncategorized

  • টেস্ট ছাড়া যেভাবে করোনা নেগেটিভ বুঝবেন।

    টেস্ট ছাড়া যেভাবে করোনা নেগেটিভ বুঝবেন।

    করোনা টেস্ট নিয়ে একটা খুব কমন ভুল ধারণা আছে। যার করোনা হয় করোনা টেস্ট পজিটিভ আসে তার আবার  করোনা টেস্টে নেগেটিভ আসতে হবে আর যখন করোনা টেস্টে নেগেটিভ আসবে তার মানে হল তিনি  করোনা মুক্ত হয়েছেন ,করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন এবং আইসোলেশন থেকে বের হতে পারবেন,

    এইটা একটা ভুল ধারণা প্রায় সবার করোনা লক্ষণ দেখা দেয়ার পরে দশ দিন পার হয়ে গেলে আইসোলেশন থেকে বের হতে পারবেন,কোন ধরনের টেস্ট করা ছাড়াই। বরং এই যে সুস্থ হয়েছেন কিনা সেটার জন্য পিসিআর টেস্ট করা কোন সমাধান না হয়ে ঝামেলার কারণ হতে পারে। কেন সেটা বুঝিয়ে বলি? 

    পিসিআর টেস্ট করোনা ভাইরাসের জেনেটিক মেটেরিয়াল খুঁজে
    অর্থাৎ

    ভাইরাসের একটা অংশ বিশেষ খুঁজে,যখন এই অংশবিশেষটা পেয়ে যায় তখন টেস্ট পজিটিভ আসে। কিন্তু এই পজেটিভ বলতে পারেনা বা বুঝতে পারেনা সেটা হলো ভাইরাসের যে অংশ বিশেষ খুঁজে পেয়েছে টেস্টে সেটা কি জীবিত নাকি মৃত? এখন আপনার যখন মাত্র সিমটম দেখা শুরু হয়েছে তখন জানার প্রয়োজন যে আপনার শরীরে করোনা ভাইরাস এর উপস্থিতি আছে কিনা। যখন পিসিআর টেস্ট করোনাভাইরাস খুঁজে পেল একটা অংশ বিশেষ খুজে পেল তারমানে আপনি  করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু যখন কয়েকদিন পার হয়ে গেছে আপনি সুস্থ হয়ে ওঠা শুরু করেছেন আপনার সিমটম গুলা ভালোর দিকে গেছে তখন কিন্তু করোনাভাইরাসের উপস্থিতি আছে কিনা শুধু সেটা দেখলেই হবে না বরং দেখতে হবে ভাইরাস মৃত আছে নাকি জীবিত, দেহে যে করোনা ভাইরাসগুলো আছে সেগুলো মাল্টি রিপ্লাই করছে কিনা আপনাকে রোগাক্রান্ত করছে কিনা আরেকজনকে রোগাক্রান্ত করছে কিনা এগুলো পিসিআর টেস্ট থেকে বোঝা যাবে না। কারণ এই টেস্টে জীবিত বা মৃত যেটাই পায় কোন অংশ বিশেষ পেলেই পজিটিভ আসে। এই কারণে দেখা যায় যে অনেকে সুস্থ হয়েছেন তার মনে হচ্ছে তার কোন সিমটম নাই কিন্তু দেখা যায় তিন সপ্তাহ চার সপ্তাহ এক মাস দুই মাস ধরে তার পিসিয়ার টেস্ট পজিটিভ ই আসে যার কারনে দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকে সারাটা সময়।

    অনেকে ভাবছেন আমার করোনা কি সেরে উঠছে না তাহলে আমরা কি আইসোলেশন থেকে বের হতে পারব না? 

    তো এখন পিসিআর টেস্ট করোনা ভাইরাস জীবিত না মৃত সেটা বলতে পারেনা তাহলে সেরে ওঠার জন্য এটা ভালো টেস্ট না। তাহলে যদি এই টেস্ট করা  না লাগে কি করে বুঝবেন করো না ভাইরাস থেকে সরে উঠেছেন কিনা। করোনা  ভাইরাস থেকে সেরে উঠেছেন কিনা সেটা জানার জন্য যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে এ পিসিআর টেস্ট করি না, দেখি না রিপোর্ট আবার নেগেটিভ হল কিনা। 

    আপনার যেদিন থেকে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দেয়া শুরু করবে তারপরে দশ দিন পার হতে হবে অর্থাৎ ১ তারিখে যদি আপনার লক্ষণ দেখা দেয় আরো দশ দিন অর্থাৎ 11 তারিখ এবং ১১ তারিখে চিন্তা করতে হবে গত 24 ঘন্টা আপনার জ্বর এসেছে কিনা। এর মধ্যেই যদি আপনি প্যারামেচিটামল জাতীয় ওষুধ খেয়ে থাকেন তাহলে আপনি বুঝবেন না যে আপনার জ্বর এসেছিল কিনা। প্যারাসিটামল এর কারণে  আপনি জ্বরটা বুঝতে পারিনি। তাহলে গত ২৪ ঘন্টায় জ্বর আসে যাবে না এবং জ্বর কমানোর জন্য এরকম কোন ওষুধ খাওয়া যাবে না।

    এমন যদি থাকে
    আর

    বাকি করো না যে সিমটমগুলো আছে গা ম্যেজ মেজ করা গলা ব্যথা এগুলো এগুলো আস্তে আস্তে ভালো হচ্ছে যদি এমন হয় ধরে নিতে পারেন আপনি করোনা থেকে সুস্থ হচ্ছেন এবং আইসোলেশন হতে বের হয়ে আসতে পারবেন। এক্ষেত্রে দুইটা সিমটম নিয়ে টেনশন করবেন না কারণ এগুলো সারতে  অনেক সময় লাগে। একটা হচ্ছে কাশি কাশিটা সারতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগে আর একটা হচ্ছে ঘ্রান শক্তি মুখের যে স্বাদ সেটা চলে যায় অনেক সময় অনেকের করোনাতে সেটাও সারতে খুব বেশি সময় লাগে। এই দুইটা সিমটম নিয়ে টেনশন করার দরকার নেই। বাকি সিমটম গুলো ইম্প্রুভ হচ্ছে এবং  আপনার গত ২৪ ঘন্টায় জ্বর আসে নাই জ্বর কমানোর জন্য কোন ঔষধ খাওয়া লাগে নাই আর সিমটম শুরু হওয়ার ১০ দিন পার হয়েছে তাহলে আপনি ধরে নিবেন যে আপনার রিকভারি হয়েছে সুস্থ হয়েছেন এবং আইসোলেশন থেকে বের হতে পারবে।যারা খুব গুরুতর অসুস্থ কিংবা যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে এইটা না। তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের  পরামর্শ অনুযায়ী টেস্ট করবেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাকি কাজগুলো করবেন। 

    নিরাপদে থাকবেন।

  • নারীদের পিরিয়ডে টিকার নতুন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

    নারীদের পিরিয়ডে টিকার নতুন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

    যুক্তরাজ্যে এ পর্যন্ত ১৩ হাজারের বেশি মহিলা জানিয়েছেন যে টিকা গ্রহণের পরে তাদের মাসিকের পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে জানিয়েছেন যে টিকা গ্রহণের পর আগের চেয়ে বেশি রক্তপাত হয়েছে। মাসিকের এই পরিবর্তন টিকার কারণেই হয়েছে কিনা তা আমরা নিশ্চিত নয়। তবে এটা টিকার কারণেও হতে পারে। আগের কিছু টিকার ক্ষেত্রে এমনটা দেখা গেছে, যেমন ফ্লু ভ্যাকসিন তারপর মেয়েদের জরায়ু মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে যে টিকা দেয়া হয় এই টিকাগুলো নেয়ার পরে মাসিকে সাময়িক কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।

    এর কোনটাই লং টার্ম নয় কিছুদিন পরেই ঠিক হয়ে যায়। টিকা নেওয়ার  পরে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম রিঅ্যাকশন শুরু করে, প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে যাতে করে আসল করোনাভাইরাস যদি আমাদের শরীরে তাহলে সে যাতে মোকাবেলা করতে পারে।এই যে যখন আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম তৈরি হচ্ছে তখন আমাদের শরীরে কিছু পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।যেমন একটু জ্বর আসতে পারে,কাঁপুনি লাগতে পারে,মাথা ব্যথা হতে পারে। আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম শরীরে অন্যান্য জায়গায় যেমন আছে আমাদের জরায়ুতে অর্থাৎ যেখান থেকে মাসিকের রক্ত বের হয় সেখানেও কিন্তু ইমিউনিটি সিস্টেম আছে,রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আছে। শরীরে অন্যান্য জায়গায় যেমন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে জরায়ুতে যে ইমিউনিটি সিস্টেম আছে সেখানেও কিছু পরিবর্তন আসতে পারে এবং জরায়ুর ইমিউনিটি সিস্টেমের পরিবর্তনের ফলে মাসিকের পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। 

    মাসিকের পরিবর্তনের কথা শুনে অনেকে ভয় পান,যে টিকা নিলে  কি গর্ভধারণের ক্ষমতা কমে যাবে?বাচ্চা নিতে সমস্যা হবে?

    একদমই না। ওই যে দুটো টিকার কথা বললাম ফ্লু টিকা আর এইচপিভি টিকা অর্থাৎ জরায়ু  মুখের ক্যান্সারের এর টিকা যেগুলা গ্রহণ করার পর  আমরা অতীতে দেখেছি যে মাসিকে সাময়িক পরিবর্তন আসতে পারে,

    এর কোনটাই গর্ভধারণে ক্ষমতা কমায় না,বাচ্চা নিতে কোন সমস্যা সৃষ্টি করে না। হাজার হাজার দম্পতির  উপরে করা খুব ভালো গবেষণা থেকে আমরা এটা জানি। 

    এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন,বুঝলাম আগের টিকায় সমস্যা হয় নাই করোনা  টিকায় বাচ্চা নিতে সমস্যা হবে না এমন কোন প্রমাণ আছে?

    উত্তর হচ্ছে, আছে,

    করোনা টিকা যখন গবেষণা চলছিল তখন প্রাথমিকভাবে সীমিত কিছু মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছিল। যে মহিলারা ট্রায়াল এ অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদেরকে বলা হয়েছিল যে ট্রায়াল চলাকালীন সময় আপনারা গর্ভবতী হবেন না। নিষেধ করার পরেও যুক্তরাজ্যে চারটি টায়ালে মোট ৬৫ জন গর্ভবতী হন। আপনারা জানেন যে ট্রায়ালের সময় অংশগ্রহণকারীদের কে দুইদলে ভাগ করা হয়, একদলকে টিকা দেয়া হয় আর আরেক দলকে টিকার মতোই অন্য একটা কিছু স্যালাইন দেয়া হয়।তো টিকা যদি গর্ভধারণের সমস্যা সৃষ্টি করত তাহলে যে দল টিকা পেয়েছে তাদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে অল্প সংখ্যক নারী গর্ভবতী হওয়ার কথা। কিন্তু দেখা গেছে ৬৫ জনের মধ্যে প্রায় সমান সংখ্যক নারী দুই দলে ছিলেন। আর এই ট্রায়াল এর মধ্যে কোটি কোটি  মানুষের মধ্যে টিকা দেয়া হয়েছে যারা টিকা পেয়েছে তাদেরকে গবেষণায় এনে দেখা হয়েছে  টিকার কারণে গর্ভধারণে কোন সমস্যা হয় এমন কোন প্রমাণ মিলেনি।তাহলে এটা কোন চিন্তার বিষয় নয়।যেকোনো ওষুধে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে তাই উপকার আর ঝুঁকির হিসাব কষাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। টিকার মাধ্যমে আমরা করোনা ঠেকানোর চেষ্টা করছি। আমরা জানি গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে করোনা গুরুতর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর করোনা থেকে মৃত্যুর সম্ভাবনা তো রয়েছেই। তো টিকার উপকারিতা ও ঝুঁকির হিসাব করে আমি নির্দ্বিধায় টিকা নিয়েছি, আমার পরিবার ও রোগীদের জন্য আমার একই পরামর্শ।

    নিরাপদে থাকবেন।

  • কোন টিকা বেস্ট? 

    কোন টিকা বেস্ট? 

    কোন টিকা বেস্ট,কোন টিকার কার্যকারিতা সবচেয়ে বেশি? কোন টিকা নিলে আমার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে? এমন প্রশ্ন অনেকেই করছে। এই প্রশ্নগুলোর উত্তর সংক্ষেপে দেয়ার চেষ্টা করব। 

    আপনারা বিভিন্ন সময় টিকার কার্যকারিতা শুনেছেন।

    ফাইজার এর টিকার কার্যকারিতা শুনেছেন ৯৫ শতাংশ,মর্ডানার টিকার কার্যকারিতা শুনেছেন ৯৪ শতাংশ, অক্সফোর্ডটিকার কার্যকারিতা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংখ্যা শুনেছেন। আমরা সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের ট্রায়াল থেকে জানি অক্সফোর্ডসট্রা যানসা টিকার কার্যকারিতা এসেছে ছিয়াত্তর শতাংশ।চায়নার সাইনো ফার্মা টিকার কার্যকারিতা এসেছে ৭৯  শতাংশ। johnson and johnson টিকার কার্যকারিতা ৬৭%। Novavax  টিকার কার্যকারিতা ৯০%। এই যে সংখ্যা গুলো বললাম সংখ্যা গুলো শুনে মনে হতে পারে যে, যে টিকার কার্যকারিতা ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ সে টিকা গুলোই বোধহয় সবচেয়ে বেশি সুরক্ষা দিবে,সে টিকাগুলোই বোধহয় বেস্ট। কিন্তু এই সংখ্যাগুলো দেখে এখনো বলা যাবে না একটা টিকা আর একটা টিকার চেয়ে ভালো কাজ করবে। এই সংখ্যাগুলো দেখে বোঝা যাবে না বা বলা যাবে না যে একটা টিকা আরেকটা টিকার চেয়ে ভালো কার্যকর কেন বলছি বুঝিয়ে বলি?

    এই যে সংখ্যাগুলো আমরা যে বলছি এগুলো ট্রায়াল থেকে নেয়া হয়েছে।

    এই ট্রাইলগুলো করেছে বিভিন্ন কোম্পানি। এখন একটা কোম্পানি যে ক্রাইটেরিয়া বলেছে গুরুতর করোনা আরেকটা কোম্পানির তার ট্রায়াল-এ একই ক্রাইটেরিয়া দিয়ে ডিফাইন করেনি। তাহলে তো এই দুটো জিনিস তুলনা করা গেল না। তারপর তারা কোন কোন ট্রায়াল-এ গুনেছে শুধুমাত্র গুরুতর করোনা রোগীর সংখ্যা। কোন ট্রায়াল-এ গুনেছে মৃদু  করোনা রোগীর সংখ্যা। এখন যার করোনা মৃদু আর যার করোনা গুরুতরএই দুটো জিনিস একই রকম জিনিস তো হলো না তো এখানেও আমাদের তুলনাটা আসে না। তারপর এই যে গুরুতর করোনা বা মৃদু করোনা টিকা নেয়ার কয়দিন পরে দেখা গেছে সেখানে অনেক তফাৎ আছে।টিকা তৈরিতে এগিয়ে থাকা তিনটি বড় প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এর মধ্যে ফাইজার ও মডার্না আরএনএ প্রযুক্তির টিকা তৈরি করেছে। এ প্রযুক্তিতে এতে দ্রুত টিকা তৈরি করা সম্ভব।

    এতে ভাইরাসের জেনেটিক কোডের ক্ষুদ্র একটি অংশ দেহে প্রবেশ করানো হয়। এতে করোনাভাইরাসের একটি অংশ তৈরি করতে শুরু করে এবং শরীর এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ প্রযুক্তির টিকা যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন পেয়েছে। অন্যদিকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকাটি আলাদা। এতে নিরীহ ভাইরাস ব্যবহার করে শরীরে জেনেটিক উপাদান প্রবেশ করানো হয়। এ টিকাটি যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে অনুমোদন পেয়েছে।কোন কোন টায়াল এ গুনেছে যে দুই ডোজ টিকা দেয়ার ১৫ দিন পরে কেমন কার্যকারিতা দেখা গেছে। আবার কোন ট্রায়াল-এ দেখা গেছে প্রথম ডোজ দেয়ার ২৮ দিন পরে কেমন কার্যকারিতা দেখা গেছে।

  • কার্ডিয়াক এরেস্ট হলে করনীয়

    কার্ডিয়াক এরেস্ট হলে করনীয়

    আপনার চোখের সামনে কেউ হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল।

    এর কারণ হতে পারে,

    কার্ডিয়াক এরেস্ট বা অন্য কোন অসুস্থতা।

    যদি কার্ডিয়াক এরেস্ট হয় তাহলে সে চোখের সামনে কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যাবে।তবে  আপনি যদি কিছু ফার্স্ট এইড  জানেন তাহলে হয়তো ওই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন হাসপাতালে নেয়া পর্যন্ত। প্রথমেই বুঝে নেই তার cardicate arrest হয়েছে নাকি অন্য কোন অসুস্থতা হয়েছে। আমাদের হার্টে একটা ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম আছে যার কারনে হার্ট সব সময় বিট করতে থাকে আর সারা শরীরে রক্ত পাম্প করতে থাকে। যখন ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেমে গুরুতর সমস্যার ফলে  হার্ট শরীরের রক্ত পাম্প করা বন্ধ করে দেয় সেটাকে বলে কার্ডিয়াক এরেস্ট।

    কার্ডিয়াক এরেস্ট  হওয়ার কমন কারণ হলো হার্ট এটাক, হার্টে বংশগত সমস্যা ইত্যাদি। একটা উদাহরণ দিয়ে এখন সামনে আগায়, ধরুন আপনার সামনে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছেন কেউ সে বংশগতভাবে হার্টে একটা সমস্যা নিয়ে জন্মেছে কিন্তু এটা সে জানতো না। কখনো কোন সমস্যা হয়নি হঠাৎ করে সে আজকেই বংশগত সমস্যার কারণে তার হার্টে ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেমে গোলমাল তৈরি হলো। নানা জায়গায় ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম ফায়ার করছে। ফলে তার হার্ট স্বাভাবিকভাবে সংকোচন প্রসারণ না হয়ে  কাপতে  শুরু করেছে। এমন কাঁপলে তো আর হার্ট শরীরে  রক্ত পাম্প করতে পারে না। ফলে ব্রেনেও রক্ত যাচ্ছে না শ্বাস প্রশ্বাস অস্বাভাবিক হয়ে এসেছে এবং সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেছে। এই সময় যে সে পড়ে গেছে তার মনে থাকবে না কারণ ওর ব্রেনে রক্ত যাচ্ছে না অক্সিজেন যাচ্ছে না ফলে ব্রেনের কিছু কোষ মারা যেতে শুরু করেছে। এই অবস্থায় আপনার কাজ শুরু। সে ব্যক্তিকে বাঁচানোর জন্য ওর হার্টের কাজটা আপনি নিজের হাতে তুলে নিবেন। সে ব্যক্তিটির বুকে জোরে জোরে  চাপ দিয়ে ব্রেনে রক্ত চলাচল করাবেন যাতে তার ব্রেন ভালো থাকে।আপনি এ কাজটি করলে ওই ব্যক্তিটি বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে দুই থেকে তিন গুণ। এটা কে বলে কার্ডিওপুলোমেনারি রিয়শ্বাসসিয়েশন বা সিপিআর। কিভাবে করবেন পুরোটা বোঝাচ্ছি? যখন দেখলেন ওই ব্যক্তিটি পড়ে গেল। তখন আপনাকে খুব দ্রুত তিনটা কাজ করতে হবে।প্রথমে এক ওই ব্যক্তির কাঁধে হালকা করে ঝাঁকি দিয়ে জোরে আওয়াজ করে জিজ্ঞেস করবেন তুমি কি ঠিক আছো? সে কোন সাড়া দিল না নড়াচড়া করলো না অর্থাৎ অজ্ঞান হয়ে গেছে। 

    দুই, তখন আপনার সাথে আরো কয়েকজন মানুষ লাগবে তাই চিৎকার করে আশেপাশের মানুষেকে বলুন জরুরী সেবা নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য এবং ডিফিবরিলেটার যন্ত্রটা নিয়ে আসছে এটাকে অনেকে AED  বা p a d  নামে চেনে।যাদেরকেই বলবেন খুব দ্রুততার সাথে কাজগুলো করতে বলবেন।যদি আশেপাশে কেউ না থাকে তাহলে মোবাইলে তাড়াতাড়ি 999 নাম্বারে বা আপনি যে অঞ্চলে আছেন সেই অঞ্চলে জরুরি সেবা নাম্বারে কল দিয়ে কারণ করে ফোনটা পাশে রাখুন। 

    তিন,

     এক আর দুই নাম্বার কাজ করার সাথে সাথে খেয়াল করুন ব্যক্তিটির  শ্বাস প্রশ্বাস কেমন আছে বুক উঠানামা করছে। বাতাস আসা-যাওয়া করছে। সবার শ্বাস-প্রশ্বাস একেবারে বন্ধ হয়ে যায় না। পারডেড অ্যারেস্ট হলে শ্বাস প্রশ্বাস কেমন হতে পারে দেখিয়ে দিচ্ছি intervals between gasps  increase।

    যদি ব্যক্তিটি আপনার কথায় সাড়া না দেয় আর শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক না হয় বন্ধ হতে হবে এমন কথা নয়। তাহলে ধরে নিবেন কার্ডিয়াক  এরেস্ট হয়েছে। এখনই সিপিআর শুরু করতে হবে। ধরেন আপনি বুঝতে পারছেন না তার স্বাভাবিক নাকি। মনে হচ্ছে শ্বাস আছে কিন্তু স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক সেটা বুঝতে পারছেন না কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কিনা, কিন্তু তাও আপনি সিপিআর শুরু করবেন। বুকে চাপ দিলে ওই ব্যক্তিটির ক্ষতি হবে এমন দুশ্চিন্তা করা দরকার নেই। আপনি বুকে চাপ দেয়া শুরু করবেন। ব্যক্তিটি সুস্থ থাকলে সে নিজেই আপনাকে সরিয়ে দিবে।

    সব গাইড লাইনেই অ্যামেরিকান হার্ট  অ্যাসোসিয়েশন ,ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন, রিসাসিয়েসন কাউন্সিল ইউকে, ক্ষতির দুশ্চিন্তা না করে সিপিআর দেওয়ার শুরু করতে বলে। যদি ওই ব্যক্তিটির কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে থাকে আপনি কিছু না করলে কয়েক মিনিটের মধ্যে সে মারা যাবে। তাই ব্যক্তিটির ক্ষতি হবে এই চিন্তা বাদ দিয়ে আপনি সিপিআর শুরু করবেন যত দ্রুত পারেন।

    এখন সিপিআর দেয়ার নিয়মটা বলি। 

    ব্যক্তিটির বুকের পাশে হাঁটু গেড়ে বসবেন। বুকের ঠিক মাঝখানে এক হাতের তালু নিচে অংশ রাখবেন আরেক হাতের তালু তার উপরে বসাবেন তারপর আঙ্গুলগুলো একটার আরেকটা ভিতরে ঢুকাবেন তারপর রোগীর বুকের উপর ঝুঁকে আসবেন যাতে আপনার কাঁধ আর হাতের তালু একটা সোজা লাইন বরাবর থাকে। হাতটা এভাবে থাকলে আপনি ঠিকমতো চাপ দিতে পারবেন। তারপর রবিটির বুকে চাপ দিবেন যাতে অন্তত ৫ সেন্টিমিটার দেবে যায়। ৫ সেন্টিমিটার কিন্তু অনেকটুকু সিপিআর দেয়ার অটোমেটিক মেশিন আমরা হাসপাতালে ব্যবহার করি। বেশ জোরে জোরে চাপ দিতে হয় এবং খুব দ্রুত করতে হয়। প্রতি মিনিটে 100 থেকে ১২০ বার। এক সেকেন্ডে প্রায় দুইবার চাপ দিতে হয়। এই কাজটা রোগীর জীবন বাঁচাতে অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বুকে চাপ দিয়ে দিয়ে রোগীর  হার্টে আর ব্রেন এ  আপনি রক্ত পাঠাচ্ছেন। দুইটা চাপ দেয়ার মাঝখানে খেয়াল রাখবেন রোগীর বুক যাতে আবার পুরোপুরি  আগের অবস্থানে ফিরে আসে এতে রক্ত চলাচল করবে। সারাক্ষণ বুকে চাপ দিয়ে রাখবেন না, এক চাপ দিয়ে তারপর  হালকা করে ছেড়ে দেবেন দুই চাপের মাঝখানে বুকের ওপর ভর দিবেন না। একজন মানুষ সাধারণত দুই মিনিটের বেশি ভালোভাবে বুকে চাপ দিতে পারেনা। তাই দুই মিনিট পরপর বা তার আগেও যদি কেউ ক্লান্ত হয়ে পড়ে মনে হচ্ছে যে ,৫ সেন্টিমিটার দাবাতে পারছে না,তাহলে আরেকজন তার জায়গা নেবে। জায়গা বদল করতে যাতে সবচেয়ে কম সময় নষ্ট হয় সেই চেষ্টা করবেন। ৩০ বার বুকে চাপ দেয়ার পর দুইটা rescue breath  দিতে হয় তারপর আবার ৩০ বার বুকে চাপ আবার মুখে rescue breath এভাবে চালিয়ে যেতে হয়। rescue breath কিভাবে দিতে হয়? 

    এক হাত দিয়ে রোগীর মাথা হালকা নিচু করে আরেক হাতের দুই আঙ্গুল দিয়ে থুতনি উঁচু করে, যেই হাত মাথায় সেটা দিয়ে রোগীর নাক বন্ধ করে তার মুখের সাথে মুখ লাগিয়ে এক সেকেন্ড ধরে শ্বাস ছেড়ে রোগীর ফুসফুসে বাতাস ঢোকানোর চেষ্টা করতে হয়। তবে অনেকেই rescue breath দিতে পারেন না বা করতে স্বাচ্ছন্দবোধ  করেন না তখন এটার দরকার নেই। rescue breath না পাড়ার  কারণে সিপিআর দেয়া থেকে দয়া করে বিরত থাকবেন না। 

    AED  এ যন্ত্রটির মাধ্যমে রোগীকে ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়। হার্ট শুধু কাঁপছে পাম্প করতে পারছে না,ইলেকট্রিক শক দিয়ে হার্টের এলোমেলো কাপাকাপি মুহূর্তের জন্য বন্ধ করা হয়। হার্ট যদি তখনো ভালো থাকে হার্টের ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম আবার স্বাভাবিকভাবে বিট করা শুরু করতে পারে। 

    উন্নত দেশগুলোতে পাবলিক প্লেসে যেমন শপিং মলে, হোটেলে,স্কুলে এই যন্ত্র বিভিন্ন জায়গায় রেখে দেয়া হয় যাতে করে প্রয়োজনে দ্রুত ব্যবহার করা যায়। এগুলো যে কেউ ব্যবহার করতে পারে পাবলিকপ্লেস থাকা Defibrillator যন্ত্রটি ধাপে ধাপে বলে দেয় কখন কি করতে হবে। রোগীর প্রয়োজন না হলে ইলেকট্রিক শক দেয়না। তাই এখানেও রোগীর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই গরম বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুন বেড়ে যায়। আমাদের দেশে সাধারণত এই যন্ত্র থাকে না। Defibrillator যন্ত্রটি হাতে থাকলে ব্যবহার করবেন আর না থাকলে সিপিআর চালিয়ে যাবেন। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে কখনো কখনো Defibrillator ব্যবহার করা হয় না সিপিয়ার যথেষ্ট। 

    যতক্ষণ না জরুরি সেবা থেকে সাহায্য আসে বা রোগীর জ্ঞান ফিরে আসে ততক্ষণ  সিপিআর চালিয়ে যাবেন।আর এসব কিছু আগে দেখে নেবেন জায়গাটি আপনার জন্য নিরাপদ কিনা রাস্তার মাঝখানে কেউ হঠাৎ করে অজ্ঞান হলে আপনি কিছু না দেখে ওইখানে ছুটে গেলে কোন দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাই নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তারপরে আগাবেন। তাহলে শিখে নিলেন এ পরিস্থিতিতে আপনার কি কি করা উচিত। বুলেট পয়েন্টে আবারো মনে করিয়ে দেই। 

    নিরাপদ কিনা দেখে নিন। 

    কাঁধে ঝাঁকুনি দিয়ে দেখুন জ্ঞান আছে কিনা 

    সাহায্য ডাকুন। 

    শ্বাস প্রশ্বাস দেখুন। 

    দ্রুত সিপিআর শুরু করুন। 

    সম্ভব হলে rescue breath দেন।

    Defibrillator ব্যবহার করুন, 

    আমাদের স্কুল গুলোতে এসব শেখালে সবচেয়ে ভালো হতো। আশা করছি এরকম বিপদে আপনাদের যাতে কখনোই পড়তে না হয়। যদি বিপদ আসেও যতটুকু মনে থাকে ততটুকু দিয়েই চেষ্টা করবেন আপনার চেষ্টাতে হয়তো একটা জীবন বেঁচে যেতে পারে। 

    নিরাপদে থাকবেন।

  • করোনার নতুন লক্ষণগুলো জেনে নিন

    করোনার নতুন লক্ষণগুলো জেনে নিন

    করোনার লক্ষণে কিছু পরিবর্তন এসেছে। 

    কিছু লক্ষণ আমরা আগে থেকে অনেক বেশি দেখতে পাচ্ছি ,এটা জানা গুরুত্বপূর্ণ কারণ না জানলে আপনার অবস্থা যদি খারাপ হয়ে যায় তাহলে বুঝতে পারবেন না যে কি কারণে অবস্থা খারাপ হচ্ছে। আগে থেকে কোন প্রস্তুতি থাকবে না কোন পরিকল্পনা থাকবে না ,আর না জানা থাকলে অজান্তে আপনি আপনার আপনজন পরিবার পরিজন যারা হয়তো বয়স্ক অন্যান্য অসুস্থতা আছে যার ফলে করোনা অনেক ভয়াবহ হওয়া সম্ভাবনা বেশি। যাদেরকে নিজের অজান্তে করোনাই  আক্রান্ত করে ফেলতে পারেন। আচ্ছা, তাহলে লক্ষণগুলোতে আসি। 

    করোনার যে লক্ষণ গুলো আপনারা সবচেয়ে বেশি জানেন সেগুলো হলো, জ্বর,খুসখুসে কাশি,অর্থাৎ যে কাশির সাথে কফ বের হয় না  শুষ্ক কাশি ,কাশি হতে থাকে এমন অবস্থায় কে বোঝায়, আর ঘ্রাণ শক্তি এবং মুখের স্বাদটা বদলে যাওয়া বা হারিয়ে যাওয়া। এগুলো এখনো আমরা দেখছি কিন্তু, এগুলোর চেয়ে বেশি কিছু লক্ষণগুলো আমরা দেখতে পাচ্ছি।

    এগুলো কি কি? 

    প্রথমটা হলো মাথা ব্যথা। মাথাব্যথা করনার একদম শুরুর দিকের লক্ষণ। খুব কমই রোগীরা আমাদের কাছে এসে বলছে ১০ জন  করনা রোগীর মধ্যে সাতজনই বলেছে যে মাথাব্যথা তাদের লক্ষণ। এখন এখানে একটা সমস্যা হল যে মাথা ব্যাথা খুব কমন একটা সমস্যা। যাদের হয়তো একটু ঘুম কম হয় খিদা লেগে থাকে সময় মতো খাবার গ্রহণ না করলে একটু স্ট্রেসের মধ্যে থাকলে বা ওয়েদার পাল্টায় তখন অনেকেরই মাথাব্যথা শুরু হয়।সব মাথাব্যথায় করোনার মাথাব্যথা না। কিন্তু মাথা ব্যথা করোনার একটা খুব কমন লক্ষণ।

    সাধারণ তো করোনার মাথাব্যথা গুলো মাথার দুই পাশেই হয়,ব্যথা মাঝারি থেকে তীব্র হয় এবং সাধারণত যে ওষুধগুলো খেলে আপনার মাথা ব্যথা কমে এই ঔষধ গুলো এই মাথা ব্যথায় লাভ হয় না। দেশে যেহেতু করোনা খুব বেশি ছড়াচ্ছে তাই মাথা ব্যথা হলে খুব দ্রুত করোনা  টেস্ট করিয়ে নেয়া ভালো। দ্বিতীয় যে লক্ষণটা আমরা সবচেয়ে বেশি দেখতে পাচ্ছি সেটা হল গলা ব্যথা। আমরা আগেও গলা ব্যথা দেখতাম কিন্তু এখন জ্বর খুসখুসে কাশি চেয়ে  বেশি দেখতে পাচ্ছি গলা ব্যথা।এটা বিভিন্ন কারণে হতে পারে কিন্তু করোনাও একটা কারণ। তৃতীয় যে লক্ষণটা আমরা সবচেয়ে বেশি দেখতে পাচ্ছি সেটা হলো নাকে সর্দি। নাকে সর্দিও ওয়েদার এর কারনে হতে পারে এলার্জির কারণে হতে পারে আবার করোনার কারণেও হতে পারে।

    তাহলে তিনটা লক্ষণ কি কি? 

    মাথা ব্যথা ,গলা ব্যথা ,ও নাকে সর্দি।এখন চিন্তা করেন মাথা ব্যথা গলা ব্যথা ও নাকটে সর্দি হলে আমরা সাধারণত চিন্তা করি হয়তো একটু ঠান্ডা লেগেছে সেটা আমরা খুব সিরিয়াসলি নেই না। এই লক্ষণ গুলো দেখা দিলে আমরা কিন্তু সচরাচর চিন্তা করি না করোনার মত একটা ভয়ংকর রোগ হতে পারে। কিন্তু এখন আমরা এই লক্ষণগুলো খুব কমন দেখছি।জ্বর কাশি নাকের ঘ্রাণ হারানো এর চেয়ে বেশি কমন দেখছি। তাই এ লক্ষণ গুলো দেখা দিলে খুব দ্রুত করানোর টেস্ট করে নিবেন। করনা টেস্টটা করালে আপনি যদি দেখেন আপনার করোণা আছে আপনি নিজের জন্য যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া দরকার। নিজে যে খেয়াল রাখার দরকার সেটা ঠিকভাবে খেয়াল রাখতে পারবেন। আপনার অক্সিজেনটা মাপতে পারবেন এবং আপনার আপনজন পরিবার-পরিজন। তাদেরকেও সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।। যদি নেগেটিভ আসে তাহলে তো ভালো চিন্তা নেই। যদি পজিটিভ আসে তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো একটা ভালো মানের পালস অক্সিমিটার কিনে নেয়া এবং আপনার অক্সিজেন এর রেজাল্ট দিনে কয়েকবার মেপে দেখা।

  • ফুটবল মাঠে মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি

    ফুটবল মাঠে মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি

    গতকাল ডেনমার্ক বনাম ইংল্যান্ডের খেলা চলছিল। হঠাৎ মাঠের মধ্যে দৌড়ানো অবস্থায় অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ডেনমার্কের ক্রিশ্চিয়ান অ্যারিস্টন, সংকেত পেয়ে খুব দ্রুত চিকিৎসক দল মাঠে প্রবেশ করেন কিছুক্ষণের মধ্যে বুঝা যায় যে অবস্থা খুবই গুরুতর। পুরো স্টেডিয়ামে নেমে আসে নীরবতা। এরিস্টনের হার্ট বিট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এটাকে আমরা বলি cardiac arrest। এমন অবস্থায় সবচেয়ে মূল্যবান হয়ে দাঁড়ায়  সময়,তখন যুদ্ধ চলে ঘড়ির কাটার সাথে। দ্রুত সঠিক চিকিৎসার না পেলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই মারা যেতে পারে মানুষ। তখন খেলার মাঠেই চিকিৎসকরা শুরু করেন সিপিআর নামের এক জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা। 

    এই সময় অ্যারিস্টনের সাথীরা চারপাশ ঘিরে দাঁড়ায় একটু আড়াল তৈরি করতে। রুদ্ধশ্বাস উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করেন মাঠে এবং মাঠের বাইরে লক্ষ লক্ষ মানুষ। চিকিৎসা চলতে থাকে দশ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে। অবশেষে এরিস্টোনের হার্ট আবারও সচল হয়। তাকে স্ট্রেচেয়ার  করে হাসপাতালে নেয়া হয় পরবর্তী চিকিৎসার জন্য। এক ঘন্টার কম সময়ের মধ্যে জানা যায় অ্যারিস্টটনের অবস্থা স্থিতিশীল হয়েছে। তার বাবা এবং তার স্ত্রীর সাথে কথা বলছেন। সবাই যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে। রেফারি প্লেয়ার ও চিকিৎসক এর দল সকলের কাটায় কাটায় সঠিক পদক্ষেপের কারণে একটা সেভ ফার্স্ট এইড এর মাধ্যমে প্রাণ বেচে গেল অ্যারিস্টটনের। এই পুরো তোর ঘটনাটা বিশ্লেষণ করার কারণ হচ্ছে প্লেয়ার ও রেফারির এর মত আপনার কি করণীয় যদি দুর্ঘটনার শিকার হন?

    এরিস্টন স্বাভাবিক ভাবে দৌড়ে আসছিল তারপর

    হঠাৎ করে তার শরীর ছেড়ে দেয় পায়ে জোর নাই, সামনে নইয়ে আসছে। এইটুকু  দেখলে বুঝা যায় তার সিরিয়াস কোন সমস্যা হয়েছে। কেন সিরিয়াস বলছি তা এখন বুঝাবো , একজন চিকিৎসক রোগী অজ্ঞান হওয়ার আগে কেমন লাগছিল সেটা জানার চেষ্টা করে। তার কি মাথা ঘুরাচ্ছিল?বমি বমি লাগছিল,মনে হচ্ছিল যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে?রোগী কি বসেছিল বা দাঁড়িয়েছিল?কি করছিল ?এগুলো জানলে অজ্ঞান হওয়ার কারণগুলো খুঁজে পেতে সহজ হয়। যদি রোগী বলে সে একদম ভালো ছিল কোন ধরনের কোন খারাপ লাগা ছিল না। হঠাৎ করে আশেপাশে মানুষ দেখল দেশে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেছে। তখন প্রথমেই চিন্তা করি গুরুতর কিছু হতে পারে। হার্টের সমস্যার কারণে এমন হয়ে থাকতে পারে,ব্যায়াম করতে করতে বা দৌড়ানোর মাঝে কেউ যদি জ্ঞান হারায় তখন আমরা হার্ট নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। এখানে আমরা এই দুটো জিনিসকে দেখতে পাই,এরিস্টেন  দৌড়াচ্ছিলেন তার মাঝে হুট করে কোন ওয়ার্নিং ছাড়াই মাটিতে পড়ে যান।

    তবে এরিস্টটনের সৌভাগ্য যে এ ঘটনাটা ঘটে পুরো দুনিয়ার সামনে। একা বাসায় এ অবস্থা হলে ব্যাপার অন্যরকম হতে পারতো।

    এরিস্টন মাঠে পড়ে যাওয়ার পরে রেফারি দ্রুত খেলা বন্ধ করে চিকিৎসক দল মাঠে আনার আহ্বান করেন। এটা ছিল প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আপনারা প্রথমে এসে কি করলেন? এমন অবস্থায় রোগী দেখার জন্য আমরা একটা বিশেষ সিকোয়েন্স ফলো করি। সংক্ষেপে এটাকে বলা হয় এ ABCDe,যে জিনিসটির রোগীকে সবচেয়ে দ্রুত মৃত্যুর দিকে ঠেলে নিয়ে যাবে। এই সিকোয়েন্সটা ফলো করলে আমরা সবার আগে এই জিনিসটার জন্য চিকিৎসা করতে পারি। প্রথমে আমরা দেখি Airway অর্থাৎ শ্বাস নালীতে কোন সমস্যা আছে কিনা। রোগী যদি স্বাভাবিক ভাবে কথা বলে তখন ধরে নেই যে শ্বাসনালী ঠিক আছে। না, হলে মাথা ও চোয়াল একটা বিশেষ কায়দায় ধরে  শ্বাসনালী স্বাভাবিক রাখি।তারপর দেখি রোগী স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছে কিনা, আমরা সাধারণত গলার এখানে পালস চেক করি।

    ঠিক চোয়ালের  নিচে হাত দিলে আপনিও পাবেন। ডাক্তাররা তার মাথার কাছে এই কাজগুলো করছিলেন প্রথমে অ্যারিস্টন শ্বাস নিচ্ছিলেন পালস  ছিল কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তা বন্ধ হয়ে যায় হার্টবিট বন্ধ হয়ে গেলে মস্তিষ্কে এবং অন্যান্য অঙ্গের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় দ্রুত সঠিক চিকিৎসা না নিলে কয়েক মিনিটের মধ্যে মৃত্যু ঘটে। আর দুধ কেন বন্ধ হয় সেটা বুঝিয়ে বলি, আমাদের হার্টে একটা ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম আছে যেটা মিনিটে হার্ট কয়বার কিভাবে বিট করবে সেটা ঠিক করে দেয়। এই সিস্টেম যখন ঠিকভাবে কাজ করে হার্ট ঠিক মতো রক্ত পাম্প  করে শরীরের সব জায়গায় পাঠাতে পারে। এই ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম যখন মারাত্মক গন্ডগোল হয়, হার্টবিট এলোমেলো ,দুর্বল, বা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হার্ট শরীরে আর রক্ত পাম্প করতে পারে না। এমন একটা কমন অবস্থা কে বলে ফেলটিক্যাল ফ্যাবরিলেশন। ,ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেম এত এলোমেলো হয়ে যায় যে চারপাশ থেকে ফায়ার করতে থাকে তখন হার্ট পাম্প করার বদলে কাপতে থাকে,এই অবস্থায় রোগীকে বাঁচানোর জন্য দ্রুত সিপিআর দিতে হয়। সিপিআর হল একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে বুকের উপর ঘন ঘন চাপ প্রয়োগ করা,উদ্দেশ্য হল মস্তিষ্ক আর হার্টের রক্ত চলাচল করানো।

    দ্রুত করতে পারলে রোগী বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা ২ থেকে ৩ গুণ বেড়ে যায় ,এই সময় বল প্রয়োগ করে অনেক চাপ দিতে হয় মিনিটে ১০০ থেকে ১২০ বার। এইটা এতটাই পরিশ্রমের কাজ যে একজন মানুষ সাধারণত এক থেকে দুই মিনিট ঠিকভাবে করতে পারে। তাই অন্য মানুষকেও পাস থেকে ডেকে নিতে হয় যাতে কোন বিরতি ছাড়া সিপিআর চালিয়ে যাওয়া যায়। 

    এবার মাঠের আলোচনায় ফিরে আসি, যখন ডাক্তাররা দেখলেন যে এরিস্টোনের পালস বন্ধ হয়ে গেছে তারা সাথে সাথে সিপিআর শুরু করেন ।সিপিআর করার জন্য ডাক্তার হওয়ার প্রয়োজন নেই যে কেউ খুব অল্প সময়ে শিখে নিতে পারেন কিভাবে সিপিআর দেয়া যায়। হার্ড কাঁপলে বা পাম্প করতে না পারলে একটা ডিফেবিলেটর  যন্ত্রের মাধ্যমে ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়,ইলেকট্রিক শক দেয়ার মধ্যে দিয়ে হার্টের এলোমেলো কাপাকাপি মুহূর্তের জন্য বন্ধ করা হয়। ডিফেবিলেটর ব্যবহার করতে যত মিনিট দেরি হয় ততই বাঁচার সম্ভাবনা কমতে থাকে অজ্ঞান হওয়ার সাথে সাথে সিপিআর আর তিন থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে ইলেকট্রিক শক দিতে পারলে রোগী বেঁচে যাওয়া সম্ভাবনা ৭৫% পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। এসবগুলো ধাপ অ্যারিস্টনের সাথে সময়মতো ঘটেছিল বলেই তিনি প্রাণে বেঁচে যান তারপরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার পরের ধাপ গুলো সম্পন্ন করার জন্য। বুঝতেই পারছেন ডিফেবিলিটর কত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। ডিফেবিলেটর  দুই ধরনের আছে অটোমেটিক আর ম্যানুয়াল, এই যন্ত্রটাই ধাপে ধাপে বলে দেয় কীসের পরে কি করতে হবে।

    আর রোগীর প্রয়োজন না হলে ইলেকট্রিক শক দেয়া হয় না।

  • ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে সুরক্ষার উপায়।

    ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে সুরক্ষার উপায়।

    পত্রিকায় হয়তো অনেকে পড়েছেন,যে ভয়ংকর ব্ল্যাক  ফাঙ্গাস এ অন্ধ হয়ে যাচ্ছেন করোনা রোগীরা। করণীয় কি? 

    প্রথমেই বলি এই সংবাদে আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই,এইটা কোন নতুন রোগ নয়, বহু পুরনো রোগ খুব অল্প মানুষেরই এই রোগ হয়।আবার আমরা অনেকেই জানি কি কি কারনে কি কি করলে এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে। পুরো বিষয়টা বুঝিয়ে বলব। 

    এই রোগের ফ্যাংগাস রোগের মূল নাম মিউকরমাইকোসিস। এটি একটি ছত্রাকঘটিত খুবই দুর্লভ রোগ। ছত্রাক কি সেটা অনেকে জানেন না। ছত্রাক দিয়ে অনেক অনেক রোগ হয় আবার আমরা ছত্রাক খাবার হিসেবেও খেতে পারি (মাশরুম এক ধরনের ছত্রাক)। মিউকরমাইকোসিস খুবই ক্ষুদ্র, আণুবীক্ষণিক ছত্রাক দিয়ে হয়।

    এই রোগটা কয়েক রকমের ফাঙ্গাস আমাদের শরীরের ভিতরে ঢুকে এই রোগটা সৃষ্টি করতে পারে।

    ফাঙ্গাসগুলো আমাদের চারপাশে যে পরিবেশ মাটি, পচনশীল বস্তু, এমনকি বাতাসেও থাকতে পারে।

    এই ফাঙ্গাসগুলো পরিবেশ থেকে অনেক ভাবে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। কিন্তু যত জনের শরীরে ব্ল্যাক ফ্যাঙ্গাস ঢুকে সবার এই রোগটা হয় না।। কারণ আমাদের শরীরে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আছে এটা ফাঙ্গাসের সাথে যুদ্ধ করে। অধিকাংশ মানে সব ক্ষেত্রেই আমাদেরও প্রতিরোধ ক্ষমতা জিতে যায়,ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কে ধ্বংস করতে পারে শরীরে বাসা বাঁধতে দেয় না কোনো রোগ সৃষ্টি হয় না। যদি কোন কারণে আমাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয় তাহলে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে রোগটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে অল্প দুর্বল থাকে তাহলেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস যে জিতে যায় তা না। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই দুর্বল মারাত্মকভাবে দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস জিতে যেতে পারে এবং এই মারাত্মক রোগটা দেখা দিতে পারে।যাদের রোগ  প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি থাকে। 

    এখন আসি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কেন বা তাদের অতি দুর্বল হতে পারে?

    যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস আছে তাদের  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই দুর্বল থাকে। এই অবস্থায় যদি করোনা হয় তাদেরকে স্টেরয়েড নামের একটা ঔষধ দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এই ঔষধটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো দুর্বল করে দেয়। স্টেরয়েড ঔষধটা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত করোনা  রোগী ছাড়াও অন্যান্যদেরকে দেয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে সেখান থেকেও এ রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। 

    আশঙ্কার ব্যাপার হলো। বিভিন্ন প্রেসক্রিপশন দেখেছি, ভাইরাল হতে দেখেছি যেখানে স্টেরয়েড নামটাও দেয়া আছে। মানুষ চাইলেই দোকান থেকে এই ওষুধ কিনে খেতে পারে। কিন্তু দেখেন করোনা রোগীদের স্টেরয়েড ওষুধ দেয়ার নির্দিষ্ট সময় আছে। যখন রোগী একটা নির্দিষ্ট  পর্যায় যায় রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে তখন স্টেরয়েড জীবন বাঁচায়।অক্সফোর্ডের গবেষণা থেকে আমরা যে জানি এই ঔষধ জীবন বাঁচায় মৃত্যুর ঝুঁকি কমায় এক তৃতীয়াংশ সেই একই গবেষণায় আমরা দেখেছি যে করোনার প্রাথমিক পর্যায়ে এই ঔষধটা দিলে মৃত্যু সম্ভাবনা বাড়তে পারে।

    এখন বলব কোন কোন ওষুধগুলো স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ 

    Betamethasone( বেটামেথাসন)

    Dexamethasone( ডেক্সামেথাসন)

    Prednisolone( প্রেডনিসোলোন)

    Methylprednisolone( মিথাইল প্রেডনিসোলোন

    Hydrocortisone ( হাইড্রকর্টিসন

     সুতরাং মৃদু করোনা রোগীদেরকে এই ওষুধটা দেয়া একেবারেই উচিত না। কিন্তু অনলাইনে ফেসবুকে বিভিন্ন প্রেসক্রিপশন এ স্টেরয়েড এর কথা বলা হচ্ছে মৃদু করোনা  রোগীদের জন্য। দয়া করে এই ঔষধ গুলো ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ক্রমে খাবেন না। একজন চিকিৎসক আপনার পরিস্থিতি বিবেচনা করে যদি ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দেন তখনই কেবল  এই ওষুধটা খাবেন।স্টেরয়েড ছাড়াও আরো কয়েকটা কারনে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অতি দুর্বল হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার এ আক্রান্ত  রোগী,যাদেরকে কেমোথেরাপি   ইমওনেও থেরাপি দেয়া হচ্ছে,বা কোন অর্গান ট্রান্সপ্লান্ট হয়েছে। যেমন, হার্ট  , লিভার ,কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট যাদের হয়েছে আর যারা এইচআইভি তে আক্রান্ত। এখন বলছি, স্টেরয়েড এর ব্যাপারে সতর্ক হওয়া ছাড়া আর কি কি করতে পারেন?

    অনেক ধুলাবালি আছে যেমন কনট্রাকশন হচ্ছে এমন জায়গা গুলো এড়িয়ে চলা,মাটি হাত তালে গ্লাভস পড়ে নেয়া আর নিয়মিত হাত ধোয়া তো আছেই। অপ্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক খাবেন না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করবেন,সে এই রোগের  লক্ষণ গুলো বলে দেই,যাতে করোনা সময় এই লক্ষণ গুলো দেখা দিলে পরামর্শ নিতে পারেন। যত তাড়াতাড়ি শুরু করা যায় ততই ভালো তাই দেরি করবেন না।

    মুখের এক পাশ ফুলে যাওয়া ব্যথা হওয়া বা অবশ্  হয়ে যাওয়া,এক চোখ ব্যথা হওয়া,লাল হয়ে যাওয়া,একটা জায়গায় দুইটা দেখা চোখের পাতা নিচে চলে আসা,ঝাপসা দেখা। 

    জ্বর মাথা ব্যথা,বুকে ব্যথা,কাশি শ্বাসকষ্ট। কাশির সাথে রক্ত যাওয়া,চোয়াল ব্যাথা, বা দাঁত ব্যথা দাঁত খুলে খুলে আসা। নাক বন্ধ নাক থেকে কালচে কিছু বা রক্ত যাওয়া। নাকের উপর কালো কালো দাগ হওয়া বা মুখের ভেতর কালো দাগ হওয়া। 

    নিরাপদে থাকবেন।

  • মাইক্রোওয়েভ ওভেনে রান্না নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

    মাইক্রোওয়েভ ওভেনে রান্না নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

    মাইক্রোওয়েভ ওভেনে রান্না করা বা গরম করা কি অনিরাপদ?

    মাইক্রোওয়েভ কি খাবারের সব গুনাগুন পুষ্টি গুনাগুন কি নষ্ট করে দেয়? 

    অনেকেরই একটা ধারণা আছে যে মাইক্রোওয়েভে রান্না করা বা গরম করা খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং এভাবে রান্না করলে বা গরম করলে খাবারের পুষ্টি গুনাগুন নষ্ট হয়ে যায়। 

    এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল এবং মোটেও বিজ্ঞানসম্মত নয়। 

    অন্যান্য রান্না করা পদ্ধতির মতই মাইক্রোওয়েভে রান্না করা নিরাপদ এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাইক্রোওয়েভ এ রান্না করলে খাবারের পুষ্টি বরং বেশি অটুট থাকে। এই পুরো ব্যাপারটা পরিষ্কার করে বুঝিয়ে বলব। 

    প্রথমেই আসি কেন বললাম যে মাইক্রোওয়েভে রান্না করলে কিছু খাবারের পুষ্টি গুনাগুন  বেশি অটুট থাকতে পারে। আমরা সাধারণত কোন খাবার রান্না করতে হলে তাপ দিয়ে রান্না করি,সেটা গ্যাসের  চুলায় রান্না হোক ,লাকড়ি চুলায় রান্না হোক মাইক্রোওয়েভ ওভেন বা অন্য ধরনের ওভেনে রান্নাই হোক। যখন আমরা একটা খাবারে তাপ দিয়ে রান্না করছি তখন সে খাবারের পুষ্টি গুনাগুন কিছুটা কমে যায়। কিছু পুষ্টি  উপাদান নষ্ট হয়। যত বেশি সময় ধরে সে খাবারটা তাপে থাকে,তত বেশি পুষ্টির উপাদান নষ্ট হতে থাকে। 

    তো এখন এই যে বিভিন্ন পদ্ধতির রান্নার  কথা বললাম,এরমধ্যে খেয়াল করে দেখেন মাইক্রোওয়েভ ওভেনে কিন্তু রান্না তাড়াতাড়ি হয়। খাবারটা অল্প সময় তাপে থাকে। তাই কিছু ক্ষেত্রে মাইক্রোওয়েভ ওভেনে রান্না করলে খাবারের পুষ্টি উপাদান বেশি অটুট থাকে। কিছু খাবার আছে যেটা আমরা তাপ ছাড়া রান্না ছাড়া খেতে পারি, কিন্তু বেশি ভাগ খাবারই আমাদেরকে তাপ দিয়ে রান্না করে খেতে হয়। না, হলে কাঁচা খাবারের যে সব জীবাণু আছে সেগুলো আমাদের শরীরে ঢুকে নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। ডায়রিয়া হতে পারে, বমি হতে পারে। তো এই যে তাপ দিয়ে রান্না করার ক্ষেত্রে অন্যান্য পদ্ধতির মধ্যে মাইক্রোওয়েভ ওভেনে যেহেতু কম সময় লাগে সেই জন্য কিছু ক্ষেত্রে খাবারের পুষ্টি উপাদান বেশি অটুট রাখে। আচ্ছা, পুষ্টি উপাদান না হয় বুঝলাম মাইক্রোওয়েভে রান্না করা খাবার কি আমাদের  শরীরের জন্য ক্ষতিকর? এই  খাবারে কি রেডিয়েশন থাকে? রেএ  থাকে যেটা আমরা যখন খাব আমাদের শরীরে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করবে ?

    এটা বোঝার জন্য মাইক্রোওয়েভ কি এটা বোঝা জরুরী। মাইক্রোওয়েভ হলো এক ধরনের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন,আমরা যে আলো দেখতে পাই এটাও এক ধরনের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন। স্কুলে যারা ফিজিক্স পড়েছেন তাদের মনে থাকবে যে বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন আছে একেকটার কাজ একেক রকম।

    মাইক্রোওয়েভ কি করে? 

    পানি বা এমন মলিকিউ যেটাতে পজিটিভ এবং নেগেটিভ দুটো চার্জ ই আছে সেগুলোর মধ্যে কম্পন সৃষ্টি করে। এই কম্পনের ফলে তাপ উৎপন্ন হয় এবং সেটা দিয়েই রান্না হয়। এসব খাবারে পানি বেশি থাকে দেখবেন মাইক্রোওয়েভ ওভেনে সেগুলো তাড়াতাড়ি রান্না হয়ে যায়,যেমন সবজি। মাইক্রোওয়েভের ক্ষেত্রে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সেটা নন আয়নাইজিং রেডিয়েশন। এটা কেন গুরুত্বপূর্ণ একদম সহজ করে বুঝিয়ে বলব। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন এর ক্ষেত্রে কিছু আছে আয়নাইজিং রেডিয়েশন, যেমন এক্সরে। এগুলোর শক্তি অনেক বেশি থাকে। দেখা যায় একটা পরমাণু থেকে ইলেকট্রন সরিয়ে নিতে পারে,অনু, পরমাণুকে  বদলে দিতে পারে,কোষে ড্যামেজ করতে পারে। এইজন্যই আমরা কোন রোগীকে এক্সরে  বা সিটি স্ক্যান করতে বললে খুব সাবধানতার সাথে বিবেচনা করি যাতে এই এক্সরে বা সিটি স্ক্যান করার ফলে যে ক্ষতির সম্ভাবনা আছে তার চেয়ে উপকারের সম্ভাবনা বেশি কিনা। কিন্তু মাইক্রোওয়েভ যেহেতু আয়নাইজিং রেডিয়েশন নয়, তাই তার ক্ষেত্রে এই আলোচনার কোন অবকাশ নেই। অর্থাৎ মাইক্রোওয়েভ থেকে খাবার বের করার পরে সেটাতে রেডিয়েশন আছে, সেটা শরীরে গেলে ক্ষতি করবে ,স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে এই আলোচনাগুলো সম্পূর্ণ অবান্তর। তাহলে মোট কথা হলো অন্যান্য রান্নার পদ্ধতির মত মাইক্রোওয়েভ ওভেনেও একটা নিরাপদ রান্নার পদ্ধতি। এবং কিছু ক্ষেত্রে খাবারের পুষ্টি গুনাগুন এতে বেশি অটুট থাকে। তবে মাইক্রোওয়েভ ওভেন ব্যবহার করার জন্য অবশ্যই নিয়মগুলি মেনে চলবেন। যেসব পাত্রে মাইক্রোওয়েভ ওভেনে রান্না করা যায় বা গরম করা যায় সেসব পাত্র ব্যবহার করবেন। অনেকে অনেক সময় প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার করেন, এটা থেকে খুব সাবধান থাকতে হবে। কারণ প্লাস্টিকে অনেক সময় এমন কিছু কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় যেটা প্লাস্টিক টাকে নরম করে কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।মাইক্রোওয়েভের তাপে সে প্লাস্টিকটা কিন্তু খাবারের মধ্যে আসতে পারে। তাই এসব  ব্যবহার না করে যে সব পাত্র মাইক্রোওয়েভে ব্যবহার করার জন্য উপযোগী সেগুলো ব্যবহার করবেন। 

    নিরাপদে থাকবেন।

  • ইফতার ও সেহেরিতে কী খাবেন?

    ইফতার ও সেহেরিতে কী খাবেন?

    ইফতার ও সেহরিতে কি খাবেন?

     কতটুকু পানি খাওয়া প্রয়োজন। কখন কতখানি ব্যায়াম করবেন এই বিষয়গুলো নিয়ে আজকে আলোচনা করব। 

    শুরুতেই বলি ইফতার এ কি কি খাবেন? 

    অনেকেই শুরু করেন খেজুর দিয়ে এটা খুব একটা ভালো অভ্যাস। খেজুরের ন্যাচারাল সুগার আছে আপনাকে দ্রুত সারাদিনের ধকল কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে আর সাথে ফাইবার বা আজ এবং নানা ধরনের খনিজ পদার্থ তো আছেই। ফাইবার হজমের জন্য খুব উপকারী, আমরা সবাই যথেষ্ট ফাইবার যুক্ত খাবার খাই না। আবার রোজায় যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় তাদের উপকারে আসবে। খেজুরের পরিবর্তে বা খেজুর খাওয়ার  ঠিক পরে যারা চিনির শরবত বা চিনি দিয়ে বানানো জুস খান এসবের পরিবর্তে পানি খাওয়া ভালো। যাদের সুযোগ আছে ডাবের পানি খেতে পারেন,ডাবের পানিতে পটাশিয়াম থাকে, আবার সারাদিন ঘামের সাথে শরীরে যে পানি শূন্যতা দেখা দেয় তা পুরনো সাহায্য করবে। শরবতের পরিবর্তে ফলের বানানো বাসার জুস খাওয়া যেতে পারে। তবে জুস বানানোর সময় চিনি দিবেন না। দোকান থেকে কেনা জুস ক্ষতিকর ক্যামিক্যাল থাকতে পারে,তাই বাসায় বানানো ফলের জুস খেতে  পরামর্শ দিয়েছে।

    কেন চিনির শরবত চিনি দিয়ে বানানো শরবত এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি?

    আমাদের শরীরে আলাদা করে চিনি খাওয়ার প্রয়োজন বা উপকারিতা নেই। বড় অতিরিক্ত চিনি খেলে নানান স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়, ওজন বেড়ে যাওয়া হার্টের রোগ ইত্যাদি। মিষ্টি কিছু খেতে চাইলে ফলমূল সবচেয়ে ভালো অপশন। খেজুর আর পানি খাওয়ার পরে কিছু ফলমূল খেতে পারেন। অনেক ধরনের ফলমূল পাবেন,যেটা ম্যানেজ করতে পারেন সেটাই খাবেন। একমাস যেহেতু খাবেন ফলমূলের পরিবর্তন তো আনতেই হবে। না, হলে একঘেয়ে লাগবে।একেক সময় হয়তো কম দামে একেক ফল পাবেন। আপনার জন্য যেটা সুবিধা হয় সেটাই বেছে নিবেন।নানা  রকমের ফলে নানা রকমের পুষ্টিগুণ থাকে তাই পরিবর্তন করে খাওয়া ভালো। এতক্ষণে  গেল তিনটা খাবার খেজুর, পানি, আর ফলমূল। অনেকেই এই সময় পেঁয়াজু ,বেগুনি,ডিম চপ , এগুলো খাবার খান।খাবার গুলো ডুবো তেলে ভাজা যা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর। এই খাবারগুলোতে বেশি পরিমাণ ট্রান্সফ্যাট থাকা সম্ভাবনা বেশি।ট্রান্সফ্যাট হচ্ছে সবচেয়ে বিপদ ধরনের ফ্যাট। এই ফ্যাট অল্প পরিমানে খেলেও অনেক পরিমানে ক্ষতি করে।গবেষণায় দেখা গেছে আপনি দিনে যে পরিমাণ ক্যালরি খান তা মাত্র ২ শতাংশ ট্রান্সফ্যাট থেকে আসে তাহলে হার্টের রোগের ঝুঁকি বাড়ে তিন শতাংশ,ক্ষতিকর কোলেস্ট্রল বাড়ায়। সারাদিন রোজা রেখে এই খাবারগুলো খেয়ে নিজের ক্ষতি না করাই উত্তম। জিলাপি,বুন্দিয়া খাবার গুলো তেলে ভাজা,চিনি দেয়া। পায়ে খাবার গুলো এড়িয়ে গেলে ভালো।

    তাহলে খেজুর পানি আর ফলমূল খাওয়ার পরে আর কি খাবেন? 

    আগে আর কিছু না খেয়ে একটা বিরতি নেওয়া  ভালো। কেউ এই সময় নামাজ পারেন বা হাঁটেন ,এই বিরতি খুব ভালো জিনিস। সারাদিন উপবাসের পরে এই যে খাবার পেটে গেল সেটার বুঝতে কিছুটা সময় লাগে। বিরতি নেয়ার ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। রোজার সময় অতিরিক্ত খাওয়া একটা বড় সমস্যা। এই কারণে অনেকে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় ,আবার অনেকের ওজন বেড়ে যায়। যারা রোজার সময় ওজন কমাতে চান তার জন্য এই বিশেষ বিরতি বিশেষ উপকারী হবে। 

    আপনার খাবারের প্লেটটা মনে মনে চার ভাগে ভাগ করবেন। অর্ধেক প্লেট নেবেন সবজি আর ফলমূল,বাকি থাকল অর্ধেক এই অর্ধেকের অর্ধেক অর্থাৎ চার ভাগের এক ভাগ নিবেন লাল চালের ভাত বা লাল আটা রুটি। আর বাকি অংশ নেবেন মাছ ,মাংস, ডাল।অর্থাৎ প্রোটিন জাতীয় খাবার। লাল চলে অনেক মিনারেল ,ভিটামিন ফাইবার থাকে,যা সাদা চালে থাকে না। সবজি বা মাছ রান্নায় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করবেন না।

    এই রান্না গুলোতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে ভালো। এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল আরো ভালো।

    তবে এই তেলের দাম বেশি আবার অনেকে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এর গন্ধ সব খাবারে পছন্দ করেন না। সেই ক্ষেত্রে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। আপনারা অন্য তেল কেনার সময় দেখে নিবেন তাতে ট্রান্স ফ্যাট আছে কিনা। ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ বোতলের গায়ে লেখা থাকে।সন্ধ্যার খাবারে দুইটা জিনিস মনে রাখতে বলেছিলাম প্রথমটা হল তেল যা নিয়ে এতক্ষণ কথা বললাম আরেকটা হল অতিরিক্ত ভোজন।আমরা ব্রেক নিয়েছিলাম অতিরিক্ত ভোজনের  সম্ভাবনা কমাতে তবে খেয়াল না রাখলে অতিরিক্ত ভজন হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে অনেকেই মনে করেন সারাদিন রোজা রাখার পরে বড় একটা খাওয়া দিতে হবে। আসলে আপনার শরীর অতিরিক্ত ভোজনের কোন প্রয়োজন নেই। অতিরিক্ত ভোজন অস্বস্তি ও ক্ষতির কারণ হয়। সবজি লাল চালের ভাত মাছ মাংস খেলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেয়ে যাবেন।

    এতক্ষণ আলোচনা করলাম ইফতার ও সন্ধ্যার খাবারে কি কি খাবেন

    এখন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পানি শূন্যতা। এটা বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এবার রোজা হচ্ছে অনেক গরমের মধ্যে। যদি পানির দিকে খেয়াল না রাখলে শরীর খারাপ হয়ে যেতে পারে। ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত কমপক্ষে ১০ গ্লাস বা আড়াই লিটার পানি খেতে হবে। ইফতার আর সেহরিতে তো পানি খাবেন মাঝে সময়টাতেও মনে করে পানি খেতে থাকবেন। তারাবি নামাজের সময়ে সাথে একটা পানির বোতল রাখতে পারেন।নামাজের আগে পরে পানি খেলেন আবার যেহেতু এটা অনেক লম্বা সময়ের একটা নামাজ এর মাঝে পানি খেয়ে নিতে পারেন। পানির পাশাপাশি পানি জাতীয় খাবার যেমন তরমুজ, শসা, টমেটো এগুলো খেতে পারেন। চা কফি দিয়ে পানি শূন্যতা পূরণ করার  চেষ্টা না করা  ভালো।কারণ এগুলোতে ঘনঘন প্রস্রাব হতে পারে ফলে উল্টো আরো পানি শূন্যতা  তৈরি হতে পারে।ভালোভাবে খেয়াল রাখবে যেন পানি শূন্যতা না হয়।পানিশূন্যতা থেকে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এখন চলে আসি সেহরি তে কি খাবেন? 

    সেহরিতে এমন খাবার আমাদেরকে বেছে নিতে হবে যা অনেকক্ষণ ধরে পেটে থাকে।

    যে খাবারগুলোতে ফাইবার বেশি,লাইসেমিক  ইনডেক্স বা জিআই কম। এতে যা হবে আমরা দিনে অল্প অল্প করে বেশি সময় ধরে এনার্জি পাব। সাদা চালের ভাত খেলে সেটা খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায়,অনেক সময় ধরে এনার্জি দিতে পারেনা একটু পর ক্ষুধা লেগে যায়। তাই সেহরির জন্য ভালো হচ্ছে লাল চালের ভাত। ওটস খেতে পারেন,কেনার সময় দেখবেন হোলগ্রেন ওটস লেখা আছে কিনা।বাদাম খেতে পারেন বাদামে ভালো ফ্যাট থাকে পেটে অনেক সময় ধরে থাকে হজম হতে সময় লাগে।চিয়া শীড এর শরবত খেতে পারেন,কলা, আপেল, কমলা, ফল খেতে পারেন। ভাত দিয়ে ঘন ডাল খেতে পারেন। রাজমা চাল খেতে পারেন, সিদ্ধ ডিম খেতে পারে। এ খাবারগুলোতে বা অন্যান্য খাবারগুলোতে আপনার গলা বুক যদি জ্বলে ,সেটা এড়িয়ে যাবেন।

    অনেকে সেহরিতে অতি ভোজন করেন এটাও কিন্তু গ্যাস্টিকের কারণ হতে পারে।

    যাদের এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয় তারা খাবার পরে শুয়ে পড়বেন না। এবার আসি ব্যায়ামে রোজার মধ্যেও ব্যায়াম চালিয়ে যেতে পারেন। কমপক্ষে সন্ধ্যার পরে এমন একটা সময় বের করবেন যখন আপনি আধা ঘন্টা দ্রুত গতিতে হাঁটবেন সপ্তাহের সব মিলিয়ে যাতে আড়াই ঘন্টা হয়। দৌড়াতে পারলে তো খুবই ভালো। যদি ইফতারের আগে ব্যায়াম করতে চান সেটাও ভালো। যারা সকালে ইয়োগা বা জগ ব্যায়াম করতে চান,সেটা করতে পারেন। মোটকথা সুস্থ থাকতে শরীর চর্চা চালিয়ে যেতে পারেন।আমি মোট চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম ইফতার ,সেহেরী, পানি শূন্যতা ও ব্যায়াম।এই চারটি বিষয়ে মনোযোগ দিলে আশা করছি আপনার একটি স্বাস্থ্যকর রমজান কাটবে। আপনার ও আপনার পরিবারের বাড়ির সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।

  • বাসায় কেউ করোনা আক্রান্ত হলে যে নিয়ম মেনে চলতে হবে

    বাসায় কেউ করোনা আক্রান্ত হলে যে নিয়ম মেনে চলতে হবে

    বাসায় কেউ করো না আক্রান্ত হলে তার জন্য যদি আলাদা রুম ভাড়া বাথরুমের ব্যবস্থা করা না যায় তাহলে কি কি পদক্ষেপগুলো নিবেন এ বিষয়গুলো আজকে আলোচনা করব। আর শেষে থাকবে বাসায় কেউ করোনা আক্রান্ত হলে অন্যদের মাঝে করনা বিস্তার রোধে কি কি করতে পারেন সেই পরামর্শ । প্রথমে বলবো অসুস্থ ব্যক্তির সাথে একই রুমে থাকার বিষয়ে ,তারপরে বলবো বাথরুম শেয়ার করার উপায় আর সবশেষে থাকবে বাসায় করোনা বিস্তার রোধে কিছু সাবধানতার কথা। 

    শুরু করছি রুম শেয়ার করার ব্যাপারে চারটি পরামর্শ নিয়ে। 

    এক, রোগীর সাথে এক রুমে থাকা অবস্থায় দুইজনেই সার্জিকাল মাক্স পড়ে থাকবেন।আর চেষ্টা করবেন রোগের রুমে যত কম সময় কাটানো যায়।

    দুই ,রোগীর সাথে এক বিছানায় ঘুমাবেন না। রোগী যেখানে আছে তার থেকে অন্তত ছয় ফিট দূরে আপনার ঘুমানোর জায়গা করবেন।সম্ভব হলে রুমে আরেকটা খাট রাখতে পারেন,অথবা মেঝেতে বিছানা পেতে নিবেন।রোগীর যেখানে মাথা আপনার খাটের পা 

    সেদিকে থাকবে। 

     তিন,রোগী যে বিছানায় আছে তার পাশে একটা পর্দা বা আবরণ তৈরি করবেন।সেটা  চাদর দিয়ে হতে পারে,কাথা দিয়ে হতে পারে ,এখানে আপনাকে সৃজনশীল চিন্তা করতে হবে।

    চার, রুমে বাতাস ঢুকতে ও বের হতে পারে এমন ব্যবস্থা করবেন।জানালা খুলে এটা করা সম্ভব। 

    এখন আসছি বাথরুম নিয়ে আলোচনায়। 

    বাসায় যদি দুইটা বাথরুম থাকে তাহলে একটা বাথরুম অসুস্থ ব্যক্তি ব্যবহার করবে আর অন্য বাথরুম বাকি সবার জন্য। কিন্তু বাসায় যদি বাথরুম একটাই থাকে তাহলে সবাইকে একটা বাথরুম ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে হবে। এই ক্ষেত্রে দুইটা সাবধানতার কথা মাথায় রাখবেন। 

    এক ,অসুস্থ ব্যক্তি বাথরুম ব্যবহার করবেন অন্যরা ব্যবহার করার পর। অসুস্থ ব্যক্তি বাথরুমে যাবে সবার শেষে। রোগীর জিনিসপত্র যেমন দাঁত মাজার ব্রাশ করোনা ছড়াতে পারে সেগুলো বেসিনের না রেখে একটা ব্যাগে ভরে রাখবেন। 

    দুই ,প্রতিবার বাথরুম ব্যবহারের পরে যে জায়গাগুলো হাত দিয়ে ধরেছেন সেগুলো  পরিষ্কার করতে হবে আর জীবনমুক্ত করতে হবে। 

    এবার বলি যে পাঁচ উপায়ে বাসায় করোনা ছড়ানো প্রতিরোধ করবেন।

    এক, যতদূর সম্ভব রোগীকে বাকিদের থেকে আলাদা রাখতে হবে।বিশেষ করে করোনা   হলে যাদের ঝুঁকি বেশি যেমন বয়স ৭০ এর উপরে,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম বা অন্যান্য রোগে আক্রান্ত যেমন ডায়াবেটিস হার্টের রোগ ইত্যাদি,তাদের থেকে রোগী অন্তত পক্ষে ছয় ফিট দূরত্ব বজায় রাখবেন। রোগীর কাছে যাবার দায়িত্ব বাসায় যে কোনো একজনকে দিবেন। বয়সে তরুণ অন্যান্য রোগ নয় এমন কেউ হলে ভালো হয়।আর এই পরিচর্যাকারি ব্যক্তি বাসার অন্যদের সংস্পর্শে আসার কমাবে যতটুকু সম্ভব। রোগীর কাছে গেলে সার্জিক্যাল  মাক্স পরে যাবেন। রোগীর জন্য গ্লাস ,প্লেট,চাদর তোয়ালে ইত্যাদি নিত্য ব্যবহার যে জিনিস সব আলাদা করে ফেলুন। একই জিনিস ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না। 

    তিন ,যিনি অসুস্থ তিনি যাতে রান্নাবান্না সাহায্য না করেন, তার খাবারটা রুমের দরজার বাইরে কেউ দিয়ে যাবে ,সে চলে গেলে রোগী খাবারটা রুমের ভিতরে নিয়ে এসে খাবে। 

    চার, কোন প্রয়োজনে রোগী রুম থেকে বের হয়ে বাসার অন্য কোথাও যেতে হয় যেমন বাথরুমে যাওয়া লাগল তখন অন্য কারো সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা থাকে,তাই একটা সার্জিক্যাল মাক্স পরে রুম থেকে বের হওয়া।আর একটা কাজ করতে পারেন বাসার  সবাইকে নিয়ে ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপে একটা গ্রুপ খুলে নিতে পারেন রুম থেকে বের হওয়ার আগে সেখানে একটা মেসেজ করে দিলেন।আবার রুমে ফিরে সবাইকে জানিয়ে  দিলেন।তাহলে বাসার অন্যরা সে সময়টাতে সতর্ক থাকতে পারবে।

    পাঁচ, রোগী নিজের রুম আর বাথরুম প্রতিদিন নিজে পরিষ্কার করবেন।যেসব জায়গা বেশি বেশি স্পর্শ করেছে যেমন টেবিল দরজার হাতল ইত্যাদি পরিষ্কার করতে হবে। নিয়মিত হাত ধুতে হবে। 

    এই সময়ে বাসায় যাতে মেহমান না আসে।করানোর সময় এটা করলে বিপরীত হতে পারে। পারলে ফোন করে রোগীর খোঁজ দিবেন। ভিডিও কলের মাধ্যমে খোঁজ নিতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করুন খোঁজ নিলে রোগীর ভালো লাগবে। 

    নিরাপদে থাকবেন।

Call Now Button