করোনা টেস্ট নিয়ে একটা খুব কমন ভুল ধারণা আছে। যার করোনা হয় করোনা টেস্ট পজিটিভ আসে তার আবার করোনা টেস্টে নেগেটিভ আসতে হবে আর যখন করোনা টেস্টে নেগেটিভ আসবে তার মানে হল তিনি করোনা মুক্ত হয়েছেন ,করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন এবং আইসোলেশন থেকে বের হতে পারবেন,
এইটা একটা ভুল ধারণা প্রায় সবার করোনা লক্ষণ দেখা দেয়ার পরে দশ দিন পার হয়ে গেলে আইসোলেশন থেকে বের হতে পারবেন,কোন ধরনের টেস্ট করা ছাড়াই। বরং এই যে সুস্থ হয়েছেন কিনা সেটার জন্য পিসিআর টেস্ট করা কোন সমাধান না হয়ে ঝামেলার কারণ হতে পারে। কেন সেটা বুঝিয়ে বলি?
পিসিআর টেস্ট করোনা ভাইরাসের জেনেটিক মেটেরিয়াল খুঁজে
অর্থাৎ
ভাইরাসের একটা অংশ বিশেষ খুঁজে,যখন এই অংশবিশেষটা পেয়ে যায় তখন টেস্ট পজিটিভ আসে। কিন্তু এই পজেটিভ বলতে পারেনা বা বুঝতে পারেনা সেটা হলো ভাইরাসের যে অংশ বিশেষ খুঁজে পেয়েছে টেস্টে সেটা কি জীবিত নাকি মৃত? এখন আপনার যখন মাত্র সিমটম দেখা শুরু হয়েছে তখন জানার প্রয়োজন যে আপনার শরীরে করোনা ভাইরাস এর উপস্থিতি আছে কিনা। যখন পিসিআর টেস্ট করোনাভাইরাস খুঁজে পেল একটা অংশ বিশেষ খুজে পেল তারমানে আপনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু যখন কয়েকদিন পার হয়ে গেছে আপনি সুস্থ হয়ে ওঠা শুরু করেছেন আপনার সিমটম গুলা ভালোর দিকে গেছে তখন কিন্তু করোনাভাইরাসের উপস্থিতি আছে কিনা শুধু সেটা দেখলেই হবে না বরং দেখতে হবে ভাইরাস মৃত আছে নাকি জীবিত, দেহে যে করোনা ভাইরাসগুলো আছে সেগুলো মাল্টি রিপ্লাই করছে কিনা আপনাকে রোগাক্রান্ত করছে কিনা আরেকজনকে রোগাক্রান্ত করছে কিনা এগুলো পিসিআর টেস্ট থেকে বোঝা যাবে না। কারণ এই টেস্টে জীবিত বা মৃত যেটাই পায় কোন অংশ বিশেষ পেলেই পজিটিভ আসে। এই কারণে দেখা যায় যে অনেকে সুস্থ হয়েছেন তার মনে হচ্ছে তার কোন সিমটম নাই কিন্তু দেখা যায় তিন সপ্তাহ চার সপ্তাহ এক মাস দুই মাস ধরে তার পিসিয়ার টেস্ট পজিটিভ ই আসে যার কারনে দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকে সারাটা সময়।
অনেকে ভাবছেন আমার করোনা কি সেরে উঠছে না তাহলে আমরা কি আইসোলেশন থেকে বের হতে পারব না?
তো এখন পিসিআর টেস্ট করোনা ভাইরাস জীবিত না মৃত সেটা বলতে পারেনা তাহলে সেরে ওঠার জন্য এটা ভালো টেস্ট না। তাহলে যদি এই টেস্ট করা না লাগে কি করে বুঝবেন করো না ভাইরাস থেকে সরে উঠেছেন কিনা। করোনা ভাইরাস থেকে সেরে উঠেছেন কিনা সেটা জানার জন্য যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে এ পিসিআর টেস্ট করি না, দেখি না রিপোর্ট আবার নেগেটিভ হল কিনা।

আপনার যেদিন থেকে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দেয়া শুরু করবে তারপরে দশ দিন পার হতে হবে অর্থাৎ ১ তারিখে যদি আপনার লক্ষণ দেখা দেয় আরো দশ দিন অর্থাৎ 11 তারিখ এবং ১১ তারিখে চিন্তা করতে হবে গত 24 ঘন্টা আপনার জ্বর এসেছে কিনা। এর মধ্যেই যদি আপনি প্যারামেচিটামল জাতীয় ওষুধ খেয়ে থাকেন তাহলে আপনি বুঝবেন না যে আপনার জ্বর এসেছিল কিনা। প্যারাসিটামল এর কারণে আপনি জ্বরটা বুঝতে পারিনি। তাহলে গত ২৪ ঘন্টায় জ্বর আসে যাবে না এবং জ্বর কমানোর জন্য এরকম কোন ওষুধ খাওয়া যাবে না।
এমন যদি থাকে
আর
বাকি করো না যে সিমটমগুলো আছে গা ম্যেজ মেজ করা গলা ব্যথা এগুলো এগুলো আস্তে আস্তে ভালো হচ্ছে যদি এমন হয় ধরে নিতে পারেন আপনি করোনা থেকে সুস্থ হচ্ছেন এবং আইসোলেশন হতে বের হয়ে আসতে পারবেন। এক্ষেত্রে দুইটা সিমটম নিয়ে টেনশন করবেন না কারণ এগুলো সারতে অনেক সময় লাগে। একটা হচ্ছে কাশি কাশিটা সারতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগে আর একটা হচ্ছে ঘ্রান শক্তি মুখের যে স্বাদ সেটা চলে যায় অনেক সময় অনেকের করোনাতে সেটাও সারতে খুব বেশি সময় লাগে। এই দুইটা সিমটম নিয়ে টেনশন করার দরকার নেই। বাকি সিমটম গুলো ইম্প্রুভ হচ্ছে এবং আপনার গত ২৪ ঘন্টায় জ্বর আসে নাই জ্বর কমানোর জন্য কোন ঔষধ খাওয়া লাগে নাই আর সিমটম শুরু হওয়ার ১০ দিন পার হয়েছে তাহলে আপনি ধরে নিবেন যে আপনার রিকভারি হয়েছে সুস্থ হয়েছেন এবং আইসোলেশন থেকে বের হতে পারবে।যারা খুব গুরুতর অসুস্থ কিংবা যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে এইটা না। তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী টেস্ট করবেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাকি কাজগুলো করবেন।
নিরাপদে থাকবেন।